পিঠে ব্যাথার জন্য দায়ী বিবর্তন!

 

সাম্প্রতিক গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিস স্টাডি অনুসারে, ব্যাক পেইন বা পিঠে ব্যাথা পৃথিবী জুড়ে ডিজ্যাবিলিটির অন্যতম কারণ। কারও মধ্যে এই সমস্যা দেখলে ডাক্তাররা অবাক হন না। কিন্তু কেন আমাদের মধ্যে এত মানুষ ব্যাক পেইনে ভোগেন? রিসার্চারগণ বলছেন, ইভোল্যুশনারি বায়োলজি আমাদের এই লোয়ার ব্যাক পেইন এর রহস্য উদঘাটনে সাহায্য করবে।
লোয়ার ব্যাকপেইন সকল বয়সের মানুষকেই এফেক্ট করে। কিন্তু World Health Organization (WHO) এর তথ্য অনুসারে, ব্যাকপেইনের কারণ অস্পষ্ট। Simon Fraser University এর ডিপার্টমেন্ট অব আর্কিওলজি এর হিউম্যান ইভোল্যুশন রিসার্চার Kimberly Plomp বলেন, “হিউম্যান ইভোল্যুশন সহ অনেক ফ্যাক্টর আছে যা ব্যাকপেইনের কারণ হয়ে থাকতে পারে। বিবর্তন পারফেক্ট নয়। বিবর্তন নিয়ে একটা সাধারণ ভূল ধারণা হল এটা একটা লাইন ধরে যাচ্ছে যার একটি উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য আছে। কিন্তু ব্যাপারটা একেবারেই সেরকম নয়।”
আমাদের পূর্বপুরুষগণ চার পায়ে হাঁটত যা তাদের গাছে উঠতে এবং বিভিন্ন আবাসস্থলে যেতে সাহায্য করেছে। ধীরে ধিরে সেই বিহ্যাভিওর ক্রমশ পরিবর্তিত হয়। আর ফসিল রেকর্ড আমাদের দেখায়, প্রায় চার মিলিয়ন বছর আগে আর্লি হিউম্যান স্পিসিজ মোটামুটি বাইপেডাল বা দ্বিপদ হয়ে গিয়েছিল যা তাদের একই সাথে নেয়ার ওপেন এরিয়া আর ডেন্স উড এরিয়ায় সুবিধা দান করে। প্রায় ১.৯ মিলিয়ন বছর আগে যখন পরিবেশ আর্দ্র ও শুষ্ক অবস্থার মধ্যে ওঠানামা করছিল তখন আর্লি হিউম্যান সম্পূর্ণভাবে বাই পেডাল বা দ্বিপদ হয়ে যায় এবং একটি অনন্য কার্ভড স্পাইন বা বাঁকা মেরুদণ্ড তৈরি হয় বিবর্তনের ধারায়।
Plomp ব্যাখ্যা করেন, “দ্রুত বিবর্তন এবং দু পায়ে চলার ক্ষমতা মানুষের স্বাস্থ্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে। মানুষের সোজা হয়ে হাঁটার ক্ষমতা লাভের করার সাথে সাথে লোয়ার ব্যাকপেইনও এসে থাকতে পারে। আমাদের নাকল-ওয়াকিং এপ কাজিনরা অনেক কম ব্যাকপেইনে আক্রান্ত হয় কারণ সোজা হয়ে হাঁটার জন্য পিঠে স্ট্রেস দিতে হয় না।”
BMC Evolutionary Biology জার্নালে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় Plomp শিম্পাঞ্জি, ওরাং ওটান, মডার্ন হিউম্যান ও এনশিয়েন্ট হিউম্যান এর মেরুদণ্ডের আকৃতি নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি আবিষ্কার করেন, যেসব লোকের মেরুদণ্ড শিম্পাঞ্জিদের মেরুদণ্ডের অনেক কাছেকাছি তারা লোয়ার ব্যাকের ভার্টেব্রা বা পর্শুকা এর ভেতরের ডিস্কগুলোর জন্য সবচেয়ে কম আঘাত পান। এই আঘাত বা লেজিওনই লোয়ার ব্যাক পেইন তৈরি করে। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে যাদের মেরুদণ্ড শিম্পাঞ্জিদের মেরুদণ্ডের মত তারা নরমাল হিউম্যান ভেরিয়েশনের মধ্যেই পড়েন। যাই হোক, নতুন এই গবেষণাটি একটি সম্পূর্ণ নতুন ধারণা তৈরি করেছে যা বলছে, আমাদের সোজা হয়ে দাঁড়ানোর আমাদের মেরুদণ্ডে অধিক স্ট্রেস পড়ে যা আমাদের ব্যাকপেইনের একটি অন্যতম কনট্রিবিউটিং ফ্যাক্টর।
http://www.biomedcentral.com/1471-2148/15/68

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.