পাওয়া গেল আর্লি হিউম্যানের নতুন অস্ত্রের সন্ধান

TOP BONE

জার্মানির “Spear Horizon” নামক ৩ লক্ষ বছর পুরোনো একটি সাইটে এক্সক্যাভেশনের ফলে ৫টি দাঁত ও একটি হিউমেরাস উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলো স্যাবার-টুথেড ক্যাট (saber-toothed cats) এর দাঁত ও হিউমেরাস। হিউমেরাসের দাগগুলো থেকে বোঝা যায় এটা কোন টুল বা সরঞ্জামের সাথে সংযুক্ত ছিল। এটাই প্রথম এভিডেন্স যেখানে স্যাবার-টুথেড ক্যাতের হাড় এর এরকম ব্যবহার হয়েছে। গবেষণাটি ournal of Human Evolution জার্নালে প্রকাশিত হয়। এটা সাজেস্ট করে, আমাদের মিডল প্লাইস্টোসিন এনসেস্টররা (প্লাইস্টোসিন যুগের মাঝামাঝি সময়ে আমাদের পূর্বপুরুষ) বর্শাকে কেবল শিকার নয়, সেলফ ডিফেন্সের কাজেও ব্যবহার করত।
Schöningen এর এই লোয়ার প্যালিওলিথিক সাইটে অনেকে রকমের প্রাচীনতম সুসংরক্ষিত এবং পূর্ণাঙ্গ কাঠের বর্শা আছে। সেই সাথে আছে হাজার হাজার প্রাণীর ফসিল রিমেইনস যার মধ্যে জায়ান্ট বেভার থেকে ওয়াটার বাফেলো পর্যন্ত আছে। ২০১২ সালের শরতে Schöningen 13 II-4 লেয়ারে একটি দুষ্প্রাপ্য মাংসাসী প্রাণী ইউরোপিয়ান স্যাবার টুথেড ক্যাট (Homotherium latidens) এর ফসিল আবিষ্কৃত হয়। এই বাঘের আকারের বিড়ালজাতীয় প্রাণীর ওজন ছিল ২০০ কেজি আর এর কাঁধ ছিল প্রায় ১ মিটার উঁচু।
এর ৫টা দাঁত (ছবি) ও হিউম্যান ফ্র্যাগমেন্টগুলো বিশ্লেষণ করা পর University of Tübingen’s এর Jordi Serangeli ও তার কলিগেরা বের করেন যে এই দাঁতগুলো দুটি ভিন্ন ক্যাটের ছিল। আর ৩০০,০০০ থেকে ৩২০,০০০ বছর পূর্বে তারা ইউরোপে পাওয়া যাওয়া সবচেয়ে নতুন Homotherium এর সদস্য ছিল। উদ্ধার করা দাঁতগুলো একতি জুভেনাইল ক্যাটের ছিল। তার আপার ইনসিজর দাঁতে প্রতি সেন্টিমিটারে ২১টি সেরেশন দেখা যায়। দাঁতগুলো উদ্ধার করা হয়েছে বর্শার আপার বার্ম অংশ থেকে।
ডান হিউমেরাসের শ্যাফট (মাঝের লম্বা অংশ) উদ্ধার করা হয়েছে বর্শার স্পিয়ারসকেল থেকে। এটা ছিল একটি শক্তিশালী, প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ক্যাটের। আর এটাতে আমাদের বিলুপ্ত পূর্বপুরুষ হোমিনিনদের আঘাতের এভিডেন্স দেখা যায়। কয়েকটি দাগ, স্ক্র্যাচ ইত্যাদি দাগ নির্দেশ করে এরা কোন সাংঘর্ষের মধ্য দিয়ে গেছে ঠিক যেমন একটা আঘাত করার টুল দিয়ে বারবার পাথরে আঘাত করলে তার মধ্যে যেরকম দাগ দেখা যায়। আবার এখানে লম্বা, প্যারালাল এবং অগভীর স্ক্র্যাপিং মার্ক ও হাড়ের একটা ক্ষয়ে যাওয়া স্তর দেখা যায়। এর অর্থ হল, হোমিনিনরা হাড়গুলো খুঁজে পায়, এরপর তারা সেগুলোকে পরিষ্কার করে ও এর উপরের সফট টিস্যু এর স্তর ঘষে তুলে ফেলে।
Serangeli জানান, “Schöningen এ হরিণ ও ঘোড়ার হাড় খুবই কমন। কিন্তু স্যাবার-টুথেড ক্যাটের হাড় দিয়ে সরঞ্জাম বানানো হয়েছে এরকম উদাহরণ এই একটাই।”
এই বিড়ালজাতীয় প্রাণীটির ফসিল সম্পগ্র ইউরোপের যেখানে খুঁজে পাওয়া যায়, সব ক্ষেত্রেই হোমিনিনদেরও ফসিল পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু তারা যে ওভারল্যাপড এরকম কোঅকারেন্স প্রমাণিত নয়। কিন্তু বিভিন্ন মডিফিকেশন করা এই হিউমেরাসটি দ্যর্থহীনভাবে বলে যে, সেন্ট্রাল ইউরোপে আমাদের পূর্বপুরুষ (যেমন Homo heidelbergensis) ও Homotherium রা একই সময়ে বাস করত।
আবার, ইয়ং ম্যামোথের রিমেইন্স এর উপর ভিত্তি করে আমরা জানতে পারি যে, ইউরোপিয়ান স্যাবার টুথেড ক্যাট বিশালদেহী স্তন্যপায়ীদের শিকার করত। তাই আর্লি হিউম্যান ও ক্যাট উভয়ের পোটেনশিয়াল শিকার ওভারল্যাপ করায় এরা একে অপরের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে। স্যাবার টুথেড ক্যাট মানুষের চেয়ে ভাল দেখতে, গন্ধ শুখতে ও শুনতে পারে। আর তারা নিরবে দ্রুত চলাচলও করতে পারে। Serangeli বলেন, “এই বিড়ালজাতীয় প্রাণীদের এত সুবিধা থাকার পরেও মানুষের কাছে বর্শা ছিল। এদের কাছে কেবল শিকারের সরঞ্জামই ছিল না, এই মাংসাসী প্রতিযোগীদের থেকে সেলফ ডিফেন্স করার সরঞ্জামও ছিল।”
http://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S0047248415002092

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.