কেন রাশিয়ার অর্থনৈতিক অবস্থা এখন এত বাজে?

কয়েক মাস আগে মনে হয়েছিল যে রাশিয়ান অর্থনীতি প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু আজ দেশটির অবস্থা ততটা ভাল নয়। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে পুতিন যখন প্রথম ইউক্রেইনে আক্রমণ করেন, তখন পশ্চিমারা দেশটির উপর অভূতপূর্ব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যার মধ্যে রয়েছে কিছু রাশিয়ান ব্যাংককে বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন করা এবং প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের অফশোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা। প্রাথমিকভাবে, মনে হয়েছিল যে এই নিষেধাজ্ঞাগুলি কাজ করেছে। রুবলের পতন ঘটে, রাশিয়ার শেয়ার বাজার বন্ধ হয়ে যায়, এবং কিছু জল্পনা ছিল যে ৯০-এর দশকের শেষের দিকের মতোই রাশিয়া আর্থিক সংকটের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। কিন্তু পরবর্তী মাসগুলিতে, রাশিয়ায় অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নত হতে শুরু করে। রেকর্ড হাইড্রোকার্বন রপ্তানি এবং হস্তক্ষেপবাদী অর্থনৈতিক নীতির সংমিশ্রণ রুবেলকে তাদের গত দুই বছরের সর্বোচ্চ উচ্চতায় ঠেলে দেয় এবং রাশিয়ান রাষ্ট্রকে একটি স্বাস্থ্যকর বাজেট উদ্বৃত্ত প্রাপ্তির দিকে নিয়ে যায়, আর সেই উদবৃত্ত দেশটি ইউক্রেনের আগ্রাসনে অর্থায়নের জন্য ব্যবহার করে।

কিন্তু এতো কিছুর পরও এর মানে এই ছিল না যে, ক্রেমলিনের দৃষ্টিকোণ থেকে সবকিছুই ওকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নিয়ম দ্বারা রুবলের শক্তি কৃত্রিমভাবে ফুলে গিয়েছিল, যার জন্য সমস্ত রপ্তানিকারকদের তাদের বৈদেশিক মুদ্রাকে ছেড়ে দিতে হয়, এবং ফাইনাল ও গাড়ির মতো কিছু সেক্টরের খুব বাজে অবস্থা চলছিল। তবুও রাশিয়ান অর্থনীতি অন্তত সবচেয়ে পেসিমিস্টিক এক্সপেক্টেশনকে অতিক্রম করতে সক্ষম হয়, এবং দেশটির যে জিডিপি পূর্বাভাস একটি রেকর্ড-ব্রেকিং মন্দার ভবিষ্যদ্বাণী করছিল তা সংশোধিত হয়ে  উপরের দিকে ওঠে। উদাহরণস্বরূপ, আইএমএফ এপ্রিলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল যে রাশিয়ার অর্থনীতি ৮.৫ শতাংশ সংকোচনের অভিজ্ঞতা অর্জন করবে, কিন্তু জুলাই মাসে এদের প্রেডিকশন পরিবর্তিত হয়ে দাঁড়ায় ৬ শতাংশে, আর অক্টোবর থেকে সর্বশেষ পূর্বাভাস হচ্ছে কেবলমাত্র ৩.৪ শতাংশ সংকোচন।

কিন্তু ক্রেমলিনের দুর্ভাগ্য হলো, গত এক মাস বা তারও বেশি সময় ধরে রাশিয়ার অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির উল্লেখযোগ্য অবনতি হয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ১৩ শতাংশে রয়েছে। রাশিয়ার জাতীয় পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউট রোস্ট্যাট গত সপ্তাহে যে প্রাথমিক তথ্য প্রকাশ করেছে, তা থেকে জানা যায় যে রাশিয়ার অর্থনীতি তৃতীয় ত্রৈমাসিকে বছরে ৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যার অর্থ রাশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে মন্দায় প্রবেশ করেছে। তার উপরে, বিশ্বব্যাপী তেলের দাম হ্রাস এবং রাশিয়ান গ্যাসের জন্য ইউরোপীয় চাহিদা হ্রাসের অর্থ হল রাশিয়ার বাজেট উদ্বৃত্ত সংকুচিত হতে শুরু করেছে, যা যুদ্ধের অর্থায়নকে আরও কঠিন করে তুলবে।

তো এই লেখাটিতে আমরা দেখে নেব কেন রাশিয়ার অর্থনৈতিক অবস্থা হঠাৎ করে খারাপ হয়ে গেছে, কেন এটি আরও খারাপ হতে পারে এবং ইউক্রেনে ক্রেমলিনের বিজয়ের সম্ভাবনাকে এই ব্যাপারটি কীভাবে প্রভাবিত করতে পারে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, রাশিয়ার অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির অবনতির তিনটি কারণ রয়েছে; তেল ও গ্যাসের দাম কমে যাওয়া, স্যাংকসনের কারণে হওয়া ঘাটতি, এবং রাশিয়া থেকে এর মানব সম্পদের পলায়ন।

তেল ও গ্যাসের দামের পতন দিয়ে শুরু করা যাক। পুতিন যখন ইউক্রেইনে আক্রমণ শুরু করেন, তখন তেলের দামের জন্য বিশ্বের মানদণ্ড ব্রেন্ট ক্রুড ব্যারেল প্রতি প্রায় ১০০ ডলারে লেনদেন হচ্ছিল। এখন, এই যুদ্ধের দ্বারা সৃষ্ট ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার জন্য পরবর্তী মাসগুলিতে তেলের দাম বৃদ্ধি পায় ও জুনের মাঝামাঝি সময়ে তা প্রায় ১২৩ ইউএস ডলারে এসে মোটামুটি স্থিতিশীল উচ্চতায় পৌঁছে। এখন, এটি সবসময় রাশিয়ার জন্য সুসংবাদ ছিল, কারণ দেশটি হচ্ছে কেবল সৌদি আরবের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক দেশ। তাদের জন্য আরও ভাল খবর ছিল এই যে, গ্যাসের দামও একই রকম প্যাটার্ন অনুসরণ করে। যুদ্ধের জন্য ইউরোপীয় গ্যাসের দাম ইতিমধ্যেই বেশি ছিল। ২৪ শে ফেব্রুয়ারী পুতিন আক্রমণ করার আগের দিনগুলিতে, ইউরোপীয় গ্যাসের বেঞ্চমার্ক ডাচ টিটিএফ প্রতি মেগাওয়াট হাওয়ারের জন্য ৮০ ইউরোতে বিক্রি হয়েছে। রেফারেন্সের জন্য বলছি, ২০২১ সালের বেশিরভাগ সময় জুড়ে এর মূল্য ছিল ২০ ইউরো। আর আগ্রাসনের পরের মাসগুলিতে, যখন ইউরোপীয় দেশগুলি শীতের আগে গ্যাস মজুত করার জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা করেছিল, তখন গ্যাসের দাম আকাশচুম্বী হয়ে ওঠে, আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে একই গ্যাস বিকোয় ৩৫০ ইউরোতে। অবস্থা যখন এই তখন রাশিয়া ছাড়ে তার তেল বিক্রি করলেও এই উচ্চ তেল ও গ্যাসের দাম তখনও রাশিয়ার জন্য দুর্দান্ত খবর ছিল। Centre for Research on Energy and Clean Air এর একটি বিশ্লেষণে উঠে আসে, রাশিয়ার হাইড্রোকার্বন রপ্তানি আয় গড়ের চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি ছিল, যা প্রতিদিন প্রায় ১ বিলিয়ন ইউরোতে বিক্রি হতো। এই বিশাল রাজস্ব ক্রেমলিনকে একটি বিশাল বাজেট উদ্বৃত্ত চালানোর অনুমতি দেয়। প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারিতে রাশিয়ার বাজেট উদ্বৃত্ত ছিল ২৫০ বিলিয়ন রুবেলের কিছু বেশি। কিন্তু জুন মাসে, যখন তেলের দাম তাদের শিখরে পৌঁছেছিল, তখন এটি বেড়ে তার পাঁচ গুণ হয়ে যায়, যা ছিল ১.৪ ট্রিলিয়ন রুবেল। এবং এই অর্থটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, পুতিনকে ইউক্রেনে তার আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার এবং প্রসারিত করার জন্য আর্থিক ভিত্তি প্রদান করেছিল।

তবে গত এক মাস বা তারও বেশি সময় ধরে তেল ও গ্যাসের দাম কমতে শুরু করে। এদিকে রাশিয়ারও বাজেট উদ্বৃত্ত হঠাৎ শুকিয়ে যায়, যা হয় মূলত চীন থেকে শক্তির চাহিদা হ্রাস হওয়ায় এবং একটি বিশ্বব্যাপী মন্দার জন্য। এর ফলে ব্রেন্ট ক্রুড এখন ব্যারেল প্রতি মাত্র ৮০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে, যা তার জুনের উচ্চতা থেকে নিচে। একই ঘটনা ঘটেছে গ্যাসের ক্ষেত্রেও। এবারের শীতটা গড়পড়তা শীতের তুলনায় কম রুক্ষ, আর সেই সাথে, ইউরোপের গ্যাস স্টোরেজ ইনিশিয়েটিভ বেশ ওয়েল-কোঅর্ডিনেটেড ছিল, যার ফলে ডাচ টিটিএফ এর দাম এখন প্রতি মেগাওয়াট ঘন্টার জন্য ১০০ ইউরোর একটু উপরে। এই দাম এখনও প্রাক-যুদ্ধ গড়ের চেয়ে অনেক বেশি হলেও এটাও ঠিক যে, দামগুলো তাদেড় আগস্টের শিখর থেকে ৬০ শতাংশ নিচে রয়েছে। এটাও লক্ষণীয় যে, রাশিয়া আগের চেয়ে কম গ্যাস রপ্তানি করছে। ইউরোপে রাশিয়ান গ্যাস রপ্তানি ফেব্রুয়ারির ২.৫ বিলিয়ন ঘনমিটার থেকে প্রায় ৮০ শতাংশ কমে বর্তমানে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ঘনমিটারে নেমে এসেছে। এখন, কম তেল ও গ্যাসের দাম কম রপ্তানি ভলিউমের সাথে মিলিত হয়ে স্পষ্টতই রাশিয়ার জন্য কম রাজস্ব নিয়ে আসছে, যার কারণে রাশিয়ার বাজেট উদ্বৃত্ত তুলনামূলকভাবে দ্রুত শুকিয়ে গেছে। অক্টোবরে, রাশিয়ার বাজেট উদ্বৃত্ত মাত্র ৫০ বিলিয়ন রুবেলে দাঁড়িয়েছে, যা জুনমাসে অর্জিত ১.৪ ট্রিলিয়ন উচ্চতা থেকে বিস্ময়করভাবে ৯৫ শতাংশ কম। আর এটি সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ রাজস্ব হ্রাস ইউক্রেনে তার যুদ্ধের অর্থায়নের জন্য রাশিয়ার ক্ষমতাকে হ্রাস করছে, বিশেষ করে যখন রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলি বিশ্বব্যাপী আর্থিক বাজারে রাশিয়ার ঋণ নেওয়ার ক্ষমতাকে সীমিত করেছে।

এবারে দ্বিতীয় কারণের দিকে এগিয়ে যাওয়া যাক, যার জন্য রাশিয়াকে এখন বেশ স্ট্রাগল করতে হচ্ছে। আর তা হচ্ছে স্যাংশনের কারণে হওয়া ঘাটতি। যখন রাশিয়ার অর্থনীতি প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছিল, তখন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যম পশ্চিমা স্যাঙ্কশনগুলোর আপাত অদক্ষতা বা ব্যর্থতা সম্পর্কিত শিরোনামগুলিতে পূর্ণ ছিল। যাইহোক, রাশিয়া সেন্ট্রাল ব্যাংক সেই সময় স্বীকার করেছিল, নিষেধাজ্ঞাগুলি কখনই তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলবে না কারণ রাশিয়ান শিল্প প্রথম কয়েক মাস তার মজুদ বা স্টকপাইলের ওপর নির্ভর করবে। কিন্তু ঠিক যেমন ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল, হ্রাসপ্রাপ্ত মজুদগুলি এখন ঘাটতির পথ দেখিয়েছে। এটা স্পষ্ট যে রাশিয়া কিছু জিনিস, বিশেষ করে সেমিকন্ডাক্টরগুলির জন্য ক্রমবর্ধমানভাবে মরিয়া হয়ে উঠছে। যদিও রাশিয়ান কোম্পানিগুলি চীন থেকে আমদানি বাড়িয়ে স্যাঙ্কশনের প্রভাব হ্রাস করার চেষ্টা করেছে, তবে ৪০টি উপাদান আমদানির ফ্র্যাকশন দৃশ্যত দুই থেকে ৪০ শতাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। অক্টোবরের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, এটি সম্ভবত এজন্য যে, রেপুটেবল চীনা সংস্থাগুলি রাশিয়ার বিজনেসগুলোর সাথে বাণিজ্য করতে অস্বীকার করছে। তাদের ভয়টা হচ্ছে হয় রেপুটেশনাল ড্যামেজ নিয়ে অথবা সেকেন্ডারি স্যাংকসন নিয়ে। এর ফলে রাশিয়াকে কম নির্ভরযোগ্য চীনা কোম্পানিগুলোর ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে, আর তাও গুরুতর ঘাটতির মুখোমুখি হয়ে যেখানে তাদের কাছে আমদানির কোনও নির্ভরযোগ্য উৎসও নেই। এদিকে এই শর্টেজের কারণে রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ অগাস্ট থেকে তাদের বিমানগুলো থেকে বিভিন্ন পার্ট খুলে নিতে শুরু করেছে। সেই সাথে এই এভিডেন্সও পাওয়া গেছে যে, রাশিয়ায় বিভিন্ন ইউরোপীয় এপ্লায়েন্স যেমন ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, ও এমনকি ব্রেস্ট পাম্প ইত্যাদি স্মাগলিং করে নিজের দেশে আনা হচ্ছে, যা আবার রাশিয়ার ইলেকট্রনিক্সের দামও বেড়ে গেছে। এই ঘাটতিগুলি সামরিক হার্ডওয়্যার এবং উইপন সিস্টেম তৈরির জন্য রাশিয়ার ক্ষমতাকেও হ্রাস করবে, যা যুদ্ধের জন্য স্পষ্টতই গুরুত্বপূর্ণ।

তবে রাশিয়া যে তৃতীয় ও চূড়ান্ত সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে তা হলো রাশিয়া থেকে মানব সম্পদ বা হিউম্যান ক্যাপিটালের পালিয়ে যাওয়া। যে কোনও আধুনিক অর্থনীতি উচ্চ প্রশিক্ষিত এবং বিশেষায়িত কর্মীদের উপর নির্ভর করে। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারিতে পুতিন তার আগ্রাসনের ঘোষণা দেয়ার পর থেকে হাজার হাজার শ্রমিক দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে, যারা রাশিয়ার মানব সম্পদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশের প্রতিনিধিত্বকারী। এটি অনুমান করা হয় যে যুদ্ধের প্রথম ছয় মাসে ২৫০,০০০ থেকে ৫০০,০০০ রাশিয়ান (যাদের বেশিরভাগই সামরিক বয়সের পুরুষ) দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের মতে, সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে ঘোষিত পার্শেল মোবিলাইজেশনের প্রতিক্রিয়ায় আরও ১,৭০,০০০ বা তারও বেশি লোক পালিয়ে গেছে। বিষয়টা হচ্ছে, যারা পালিয়ে যাচ্ছে তারা সাধারণভাবে, ধনী এবং গড় রাশিয়ানদের চেয়ে বেশি শিক্ষিত হবে। এখন দেশ থেকে এই হাজার হাজার সুখিকখিত যুবক যুবতী হারানোর ব্যাপারটা দেশটির মানব মূলধনকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করবে। উপরন্তু, এই পলায়ন শ্রম বাজারে একটি কঠোর প্রভাব ফেলবে এবং মুদ্রাস্ফীতির উপর ঊর্ধ্বমুখী চাপ সৃষ্টি করবে, যেখানে দেশটির মুদ্রাস্ফীতি ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি।

সুতরাং উপসংহারে বলা যায়, এই সমস্ত কারণগুলি, রাজস্ব হ্রাস, কম্পোনেন্ট শর্টেজ, আর সাম্প্রতিক মানব সম্পদের প্রস্থান রাশিয়ার অর্থনীতি এবং এর মধ্যে দিয়ে যুদ্ধ করার ক্ষমতাকে হ্রাস করবে। এর কারণ হল, রাজস্বের অংক সীমিত হয়ে গেলে পুতিন এই আগ্রাসনে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে পারেন তার পরিমাণও কমে যায়। আর তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে রাশিয়ায় সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত ২০২৩ সালের বাজেটে। সেখানে ২০২৩ সালে মিলিটারি স্পেন্ডিং ৪০% বেড়ে মোট বাজেটের ৪.৫% হতে যাচ্ছে। এখন আপনি বলতেই পারেন যে, মিলিটারি স্পেন্ডিং তো বাড়ছে, তাহলে যুদ্ধের অক্ষমতার প্রতিফলন কোথায়? প্রতিফলন বুঝতে পারবেন যদি জাস্ট দুটো ফ্যাক্টের কথা বিবেচনা করেন। প্রথমত, রাশিয়া পার্শেল মোবিলাইজেশনের মাধ্যমে তাদের ট্রুপ সংখ্যা ৩০% বাড়িয়েছে, এর ফলে সোলজার প্রতি যে খরচ বেড়েছে সেই বিবেকনায় মিলিটারি স্পেন্ডিং মাত্র ৪০% বৃদ্ধি তেমন কিছু নয়। আর দ্বিতীয়ত, ঐতিহাসিকভাবে দেখা যায় একটি ফুল স্কেল ওয়ারে জিততে গেলে মিলিটারিতে মোট জিডিপি এর ৫% এরও বেশি খরচের দরকার পড়ে, যা পুতিন করেননি, এবং করতে সক্ষম হবে বলেও মনে হয়না। তাই রাশিয়ার ইকোনোমি যদি এভাবেই স্ট্রাগল করতে থাকে, তাহলে তার যুদ্ধ প্রচেষ্টার ব্যাপারটিও ক্রমশ জটিলতর হতে থাকবে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.