মানুষের হিপ্পোক্যাম্পাস সেক্সুয়ালি ডিমরফিক নয়

shutterstock_259159820

পুরুষ ও নারীর মস্তিষ্ক ভিন্ন কিনা এব্যাপারে এখনও ডিবেট চলে। কেউ বলে ভিন্নতা আছে, আবার কেউ তাতে সম্মতি দেয় না। যাই হোক, NeuroImage জার্নালে প্রকাশিত হওয়া নতুন একটি রিসার্চ একটা ব্যাপারে বলছে ডিফারেন্স নেই আর সেটা হল হিপ্পোক্যাম্পাস। শুধু তাই নয়, এটা অন্য বিষয়গুলোর ক্ষেত্রেও সন্দেহ প্রকাশ করছে। কেন? শেষে বলছি।

শারীরিক্ দিক দিয়ে কোন স্পিসিজের দুই লিঙ্গের মধ্যে ভিন্নতাকে সেক্সুয়াল ডিফরমিজম বলে। আর এর সবচেয়ে ভাল উদাহরণ হচ্ছে আমাদের রিপ্রোডাক্টিভ অর্গান বা প্রজনন সম্পর্কিত অঙ্গসমূহ। কিন্তু আরও কিছু ভেরিয়েশন দেখা যায়। অনেক প্রাণীরই মেল স্পিসিজগুলো তাদের ফিমেল কাউন্টারপার্ট এর চেয়ে বেশি কালারফুল ও সুসজ্জিত হয়। মেয়েদের আহ্বান করতে হবে তো…

আরও অনেক সুক্ষ্ম ভেরিয়েশন আছে। আর মানুষের মস্তিষ্ককেও প্রায়ই এর ব্যতিক্রম হিসেবে ভাবা হয় না। একজন এডাল্ট পুরুষের মস্তিষ্ক একজন নারী মস্তিষ্কের চেয়ে আয়তনে মোটামুটি ১৪ শতাংশ বড় হয়। আর হোয়াইট ও গ্রে ম্যাটারের অনুপাতও পুরুষের মস্তিষ্কে বেশি। এহাড়াও মস্তিষ্কের আরও কিছু বিশেষ স্ট্রাকচারেও ভেরিয়েশন দেখা যায়।

হিপ্পোক্যাম্পাস শর্ট টার্ম, লং টার্ম মেমরি; স্ট্রেস কনট্রোল, নেভিগেশনের সাথে সম্পর্কিত। পূর্বে দেখানো হয়েছিল এটা এনাটমি ও নার্ভ সেলের মধ্যে স্ট্রাকচারাল কানেকশন শক্তিশালী করার ভিত্তিতে লিঙ্গভেদে ভিন্ন রকমের হয়। যদিও নারী পুরুষের ব্রেইনের পার্থক্য নিয়ে বহুদিন ধরেই ডিবেট চলে আসছে, হিপ্পোক্যাম্পাসের সাইজ নিয়ে করা এই নতুন স্টাডিটি আগের থিওরিটিকে উড়িয়ে দিয়েছে।

রিসার্চটি Rosalind Franklin University of Medicine and Science দ্বারা পরিচালিত হয়। রিসার্চটি মেটা স্টাডির একটি ফর্ম। মেটা স্টাডি হল কোন বিষয় সম্পর্কিত প্রচুর রিসার্চ পেপার ইনভেস্টিগেট করা। রিসার্চাররা ৭৬টি রিসার্চ পেপার নিয়ে ইনভেস্টিগেট করেছেন যেগুলোতে এম আর আই স্ক্যান বাmagnetic resonance imaging (MRI) scan ডেটা ব্যবহার করা হয়েছিল (আমরা জানি magnetic resonance imaging (MRI) scan একটি একটি নন ইনভ্যাসিভ বা অক্ষতিকারক প্রোবিং (অনুসন্ধান) টেকনিক)। এটা দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশের তৃমাত্রিক স্ট্রাকচার সহ অনেক কিছু সম্পর্কে সহজেই জানা যায় যার মধ্যে হিপ্পোক্যাম্পাসের কমপ্লেক্সিটিগুলোও আছে।

পূর্বে ভাবা হত যে, হিপ্পোক্যম্পাস নারীদের মস্তিষ্কে পুরুষেরটার তুলনায় সাইজে বড়। যা ইমপ্লাই করত যে আবেগের মাধ্যমে নারীদের নিজেদেরকে প্রকাশ করার ক্ষমতা পুরুষদের তুলনায় বেশি। কিন্তু বর্তমানের এই ৭৬টি পেপার থেকে পাওয়া মেটা স্টাডিটি ৬০০০ নারীপুরুষের হিপ্পোক্যাম্পাসের এম আর আই স্ক্যানগুলোর ডেটা বিশ্লেষণ করে বলছে এই দুই লিঙ্গের হিপ্পোক্যাম্পাসে কোনরকম পার্থক্য নেই।

গবেষণাটির প্রধান অথর এবং উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল স্কুলের নিউরোসায়েন্সের এসোসিয়েট প্রোফেসর Lise Eliot বলেন, ” নারী পুরুষের মধ্যে স্টেরিওটাইপিক ডিফারেন্সগুলো ব্যাখ্যা করতে মস্তিষ্কের সেক্স ডিফারেন্স বের করা অনিবার্য। কিন্তু অনেকেই এটা বের করার জন্য ছোট একটা স্যাম্পল দেখেই অনেক বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন যেখানে অনেক বড় স্যাম্পল ও অনেক বেশি ডেটা কালেক্ট করার পর দেখা যায় ডিফারেন্সটা মামুলি অথবা একেবারেই নেই।”

http://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S1053811915007697

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.