তরুণ বয়সের পুরুষেরা পর্নকে সম্ভবত সেক্সিস্ট বা লিঙ্গবাদী দৃষ্টিতে দেখে

সেই দিনগুলোতে এমন দিন ছিল যখন অগণিত বয়ঃসন্ধিকালীন তরুণ পালঙ্কের নিচে লুকিয়ে রাখা পুরাতন প্লেবয় পত্রিকা মাধ্যমে যৌনতার প্রথম অভিজ্ঞতা লাভ করত। পর্নোগ্রাফি, সর্বোচ্চ গ্রাফিক এবং আরো ঝকঝকে, এখন স্মার্টফোন বা একটি ল্যাপটপের মাধ্যমে যেকোনো ব্যক্তির কাছে মাত্র কয়েক ক্লিক দূরে।

নেব্রাস্কা-লিঙ্কন বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন গবেষণায় এই সমস্যাটি নিরীক্ষণ করা হয়েছে এবং দেখা গেছে যে কিশোরেরা যখন তাদের প্রথম পর্নোগ্রাফির মুখোমুখি হয়, তখন সম্ভবত তারা বিশ্বাস করে যে নারীদের উপর কর্তৃত্ব করা উচিত।

গবেষক আলিসা বিস্কম্যান এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা আশা করেছিলাম যে তরুণ ছেলেগুলো যখন প্রথম পর্নোগ্রাফির সাথে মুখোমুখি হয়েছিল, তারা সম্ভবত প্লেবয় নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি নারীদের উপর পুরুষের ক্ষমতার নিয়মাবলী মেনে চলে।”

অদ্ভুতভাবে ঘটনা এটা নয়, ছেলেটির বয়স যত বেশি হয় তার তত বেশি উচ্চতর যৌনতার ক্ষেত্রে প্লেবয় মনোভাবাপন্ন হবার এবং একাধিক যৌনসঙ্গির প্রতি আগ্রহ থাকার সম্ভাবনা বাড়ে। অথবা গবেষকরা যেটা বলছে “প্লেবয় নরমস” বা “প্লেবয় আদর্শ”।

সহ-লেখক ক্রিসি রিচার্ডসন বলেন, “ম্যাসকুলিনিটি ও পর্নগ্রাফি নিয়ে খুব বেশী গবেষণা হয়নি। আমাদের কাছে এরকম খুব বেশী তত্ত্ব নেই যে পর্নোগ্রাফির ব্যবহার এবং প্লেবয়ের নিয়মগুলির মধ্যে এই অপ্রত্যাশিত বিপরীত সম্পর্ক ব্যাখ্যা করবে।”

দলটি ওয়াশিংটন ডিসি তে আমেরিকান সাইকোলজিকাল এসোসিয়েশন সম্মেলনে এই সপ্তাহে তাদের ফলাফল প্রকাশ করে। তাদের গবেষণায় নারী, যৌনতা এবং পর্নোগ্রাফির সাথে তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তাদের মতামত সম্পর্কে ১৭ থেকে ৫৪ বছর বয়সী ৩৩০ জন পুরুষের জরিপ করা হয়েছে।

সার্ভের মধ্যে লোকজন প্রথম পর্ন অভিজ্ঞতা অর্জন করে গড়ে ১৩ বছর বয়সে। সবচেয়ে ছোট ৫ বছর বয়সে আর সবচেয়ে বেশী বয়স্ক হচ্ছে ২৬ বছর। প্রায় ৪৩ শতাংশ পর্ন দেখে প্রথমবার দুর্ঘটনা বশত, যেখানে ৩৩ শতাংশ বলেছে স্বেচ্ছায় দেখেছে এবং ১৭ শতাংশ তাদের জোর করে দেখানো হয়েছে কারো না কারো দ্বারা। বাকি ৬ শতাংশ কোন উত্তর দেয়নি।

তাদের উপস্থাপনের সময় সাইকোলজিস্টরা বলেন পূর্বের গবেষণায় তারা দেখিয়েছে ৮৭ শতাংশ তরুণ প্রাপ্তবয়স্ক পর্নোগ্রাফি দেখে, প্রায় এর অর্ধেক সপ্তাহে কমপক্ষে একবার দেখে।

তাহলে এই সমস্যা সমাধানের উপায় কি? কেউ কেউ বলেন তারা এর উত্তর জানে। ইউকে সম্প্রতি ডিজিটাল ইকোনমি বিল পাস করেছে যা পর্নোগ্রাফি ও পে-পার-ভিউ টিভি পর্ন অনলাইনে দেখার জন্য বয়স স্টিকার ভেরিফিকেশন আরোপ করেছে। বিলটির পেছনে রাজনীতিবিদদের দাবি ছিল “ইন্টারনেটকে নিরাপদ করা”, যদিও কিছু মন্তব্যকারীরা মনে করে যে এই “নিষেধাজ্ঞার ধ্রুপদী যুগ”-এ ফিরে আসে।

আপনার ব্যক্তিগত মতামত এই বিষয়ে যাই হোক না কেন, অনেক গবেষকরা বলছেন যে জনস্বাস্থ্য এবং সমাজ সম্পর্কিত অসংখ্য সমস্যা বোঝার জন্য আরো বেশি অধ্যয়ন গুরুত্বপূর্ণ। সর্বোপরি পর্ন হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসতেছে এবং অবশ্যই যে কোন জায়গায় যে কোন সময় শীঘ্রই যাচ্ছে না।

 

তথ্যসূত্র:

  1. http://news.unl.edu/newsrooms/today/article/boys-and-porn-researchers-find-age-of-first-exposure-linked-to-sexist/
  2. https://unl.box.com/s/52k40xirbg4exs6xckgpinjm7e80rurl
  3. https://arstechnica.com/tech-policy/2017/07/age-verification-porn-digital-economy-act/
  4. http://www.newstatesman.com/science-tech/privacy/2017/05/uk-has-now-entered-draconian-era-porn-prohibition
  5. http://www.iflscience.com/editors-blog/why-public-health-scholars-should-study-pornography/
  6. http://www.slate.com/articles/health_and_science/science/2013/02/prehistoric_pornography_chinese_carvings_show_explicit_copulation.html

 

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.