কোন কোন দেশ ইসরায়েলকে সমর্থন করে?

৭ই অক্টোবরের ঘটনা এবং ইসরায়েলের পরবর্তী প্রতিক্রিয়া দাগেস্তান থেকে শুরু করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ ক্যাম্পাস পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিতর্ককে পুনরুজ্জীবিত করেছে। এই ব্যাপারে বৈশ্বিক মতামত বিশ্বজুড়ে ব্যাপকভাবে ভিন্ন, মানে এক্সট্রিম ইজরায়েলি থেকে এক্সট্রিম ফিলিস্তিনি অব্দি সব রকম সমর্থনই দেখা যায়, তবে মোটের ওপর পশ্চিমা দেশগুলি সাধারণত ইসরায়েলকে বেশি সমর্থন করে, অন্যদিকে গ্লোবাল সাউথ হিসাবে পরিচিত দেশগুলি তেমনটা করেনা। এই লেখাটির লক্ষ্য ইসরায়েল সম্পর্কে বিশ্বের অবস্থানের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ সরবরাহ করা, সর্বাধিক এবং সর্বনিম্ন ইসরায়েলপন্থী দেশগুলিকে চিহ্নিত করা। এটা লক্ষ করা গুরুত্বপূর্ণ যে দেশগুলিকে ইসরায়েলপন্থী বা বিরোধী হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করাটা কেবল এদের অভ্যন্তরীণ জাতীয় পার্থক্য এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের ব্যাপার না, খালি সেগুলো বিবেচনা করলে অতিসরলীকরণ হয়ে যাবে। এছাড়াও, ইউনাইটেড ন্যাশন্স এর প্রতিটি সদস্য দেশের অবস্থান পরীক্ষা করা অবাস্তব। তাই লেখাটিতে ফোকাস সেই দেশগুলির দিকে থাকবে যারা স্পষ্টভাবে ইসরায়েলপন্থী এবং স্পষ্টভাবে ইসরায়েল বিরোধী। অন্যান্য বেশিরভাগ দেশ যাদের নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে না সেগুলো সাধারণত আন্তর্জাতিক আইন সমুন্নত রাখা এবং আঞ্চলিক উত্তেজনা রোধকে অগ্রাধিকার দেয়। ইউনাইটেড ন্যাশন্স এর সাম্প্রতিক সাধারণ পরিষদের ভোটে এর সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য একটি মানবিক যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দেওয়ার মাধ্যমে এটি স্পষ্ট হচ্ছে। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি অবিচল মিত্র হিসাবে রয়ে গেছে, অন্যান্য দেশের অবস্থান ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক এবং কৌশলগত বিবেচনার মিশ্রণকে প্রতিফলিত করে। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুকে ঘিরে বিশ্বব্যাপী আলোচনার বিস্তৃত উপলব্ধির জন্য এই বৈচিত্র্যময় দৃষ্টিভঙ্গিগুলি বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শুরুতে সবচেয়ে ইসরায়েলপন্থী দেশগুলি কী কী দেখা যাক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের নিকটতম মিত্র হিসাবে দাঁড়িয়েছে, দেশ দুটির সম্পর্ক ১৯৭৩ সালের ইয়োম কিপুর যুদ্ধের পরে দৃঢ় হয়েছিল। অতীতে বাইডেন ও ওবামা নেতানিয়াহুর সমালোচনা করলেও যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের প্রতি জোরালো সমর্থন বজায় রেখেছে। ৭ অক্টোবরের হামলার পর বাইডেন সামরিক সহায়তা বৃদ্ধি এবং ইউনাইটেড ন্যাশন্স-এ মানবিক যুদ্ধবিরতির বিরোধিতা করার পাশাপাশি মানবিক বিরতির আহ্বান জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে এই সমর্থনকে আরও জোরদার করেছিলেন।

ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্রদের কথা বলার আগে, এর কিছু অ-পশ্চিমা মিত্রদের উল্লেখ করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, গুয়াতেমালা এবং প্যারাগুয়ে ইউনাইটেড ন্যাশন্স এর মানবিক যুদ্ধবিরতির বিরুদ্ধে ইসরায়েলের পক্ষে থাকা কয়েকটি দেশের মধ্যে ছিল। উভয় দেশের সাথে ইসরায়েলের সম্পর্ক বিকশিত হয়েছিল যখন তারা ইসরায়েলের সাথে ইন্টারন্যাশনাল আউটলায়ার হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল। গুয়াতেমালার গৃহযুদ্ধের সময় ইসরায়েল গুয়াতেমালা সরকারকে অস্ত্র সরবরাহ করেছিল। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর ইসরায়েল ও প্যারাগুয়ের আলফ্রেদো স্ট্রসনার সরকার গাজা থেকে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে প্যারাগুয়েতে স্থানান্তরের জন্য একটি বিতর্কিত চুক্তি করে। সম্প্রতি প্যারাগুয়ে ও গুয়াতেমালা ইসরায়েলপন্থী নেতা নির্বাচিত করেছে। মে মাসে সান্তিয়াগো পেনা প্যারাগুয়ের প্রেসিডেন্ট হন এবং ইসরায়েলে দেশটির দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তর করেন। আগস্টে গুয়াতেমালা ইসরায়েলের সাথে সম্পর্কযুক্ত দুর্নীতিবিরোধী আইনজীবী বার্নার্ডো আরভেলোকে নির্বাচিত করে। জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং ইসরায়েলে প্যারাগুয়ের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত আরভেলো প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জুয়ান জোসে আরভেলোর পুত্র, যিনি ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম বিশ্ব নেতাদের মধ্যে ছিলেন।

ধর্মীয় কারণে ইসরায়েলের সঙ্গে জোট বেঁধে পাপুয়া নিউ গিনি গত সেপ্টেম্বরে জেরুজালেমে তাদের দূতাবাস স্থানান্তর করে। দেশটি এর আগে ইউনাইটেড ন্যাশন্স-এ মানবিক যুদ্ধবিরতির বিপক্ষে ভোট দিয়েছিল। আরেকটি অ-পশ্চিমা দেশ ভারত ইসরায়েলের পক্ষে উল্লেখযোগ্য অবস্থান দেখিয়েছে। যদিও ভারত জাতিসংঘে মানবিক যুদ্ধবিরতির বিরুদ্ধে ভোট দানে বিরত ছিল, প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রকাশ্যে ইসরায়েলের প্রতি অবিচল সমর্থন প্রকাশ করেছেন। শক্তিশালী বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী সহযোগিতা ক্রমবর্ধমানভাবে ভারত ও ইসরায়েলকে আরও কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। মোদির ইসরায়েলপন্থী অবস্থান সম্ভবত তার হিন্দু বেসের মধ্যে মুসলিম বিরোধী মনোভাব দ্বারা প্রভাবিত। উপরন্তু, নেতানিয়াহুর সাথে মোদির ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে এবং বর্তমান ইসরায়েলি ও ভারতীয় সরকারের মধ্যে মতাদর্শগত মিল রয়েছে, উভয়কেই এখন শক্তিশালী নেতাদের নেতৃত্বে নৃতাত্ত্বিক-ধর্মীয় রাষ্ট্র বা এখনো-রিলিজিয়াস স্টেইট বলা যায়।

পশ্চিমা দেশগুলিতে, ইসরায়েলের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিতে তারতম্য দেখা যায়, বিশেষত ইউরোপে। যুক্তরাজ্য ইসরায়েলের অন্যতম সমর্থক। এটিই একমাত্র ইউরোপীয় দেশ যারা সাম্প্রতিক নিরাপত্তা পরিষদের ভোটে মানবিক বিরতিকে সমর্থন করার পরিবর্তে ভোট দানে বিরত ছিল। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ইসরায়েলের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থনের অঙ্গীকার করেছেন, এমনকি যুদ্ধবিরতির পক্ষে কথা বলার জন্য একজন মন্ত্রীকেও বরখাস্ত করেছেন। অনেক মধ্য ইউরোপীয় দেশও ইসরায়েলপন্থী অবস্থানের দিকে ঝুঁকে পড়ে, যা আংশিকভাবে তাদের সাধারণত আমেরিকানপন্থী পররাষ্ট্রনীতি দ্বারা প্রভাবিত হয়। উল্লেখ্য, অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি, চেকিয়া এবং ক্রোয়েশিয়া একমাত্র ইউরোপীয় দেশ যারা ইউএন-এ ইসরায়েলের পাশাপাশি মানবিক যুদ্ধবিরতির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে।

জার্মানির রাজনৈতিক অবস্থান উল্লেখযোগ্যভাবে ইসরায়েলপন্থী, যা মূলত হলোকাস্ট থেকে উদ্ভূত ঐতিহাসিক বাধ্যবাধকতার অনুভূতি দ্বারা চালিত। এর বিপরীতে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর নেতৃত্বাধীন ফ্রান্স কিছুটা কম ইসরায়েলপন্থী অবস্থান গ্রহণ করেছে। ম্যাক্রোঁর দৃষ্টিভঙ্গি তার কূটনৈতিক আকাঙ্ক্ষা এবং অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা সম্পর্কে উদ্বেগ দ্বারা প্রভাবিত। ইউরোপের বৃহত্তম ইহুদি ও মুসলিম জনগোষ্ঠীর দেশ ফ্রান্সে ম্যাক্রোঁ ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারের প্রতি সুস্পষ্ট সমর্থনের চেয়ে শান্তিকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। ম্যাক্রোঁ এমনকি গাজায় অভিযান অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এইএস বা আইএসআইএসের (ISIS) বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জোট সম্প্রসারণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যা ইসরায়েলের এপ্রোচ থেকে একটি ভিন্ন পদক্ষেপ ছিল।

ইউএন-এ ফ্রান্সের অবস্থান জার্মানি এবং যুক্তরাজ্য উভয়ের থেকে ভিন্ন ছিল, কারণ তারা মানবিক যুদ্ধবিরতি ভোটের সময় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিল। স্পেন, লুক্সেমবার্গ এবং আয়ারল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ কেবল সাময়িক বিরতি নয়, সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতির পক্ষে মত দিয়েছে। নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত করেছেন। ইসরায়েলের সাথে আয়ারল্যান্ডের সম্পর্ক বিশেষভাবে উত্তেজনাপূর্ণ, আংশিকভাবে আইরিশ জাতীয়তাবাদী এবং ফিলিস্তিনের মধ্যে ঐতিহাসিক সংহতির কারণে। ১৯৮০-এর দশকে ইউএন-এর দক্ষিণ লেবানন শান্তিরক্ষী বাহিনীতে (South Lebanon peacekeeping force) আইরিশ সৈন্যদের সাথে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ থেকেও আয়ারল্যান্ডের অভিযোগ উঠেছে। আয়ারল্যান্ড ইইউর প্রথম দেশ যারা দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান বা টু স্টেট পলিসির পক্ষে ছিল এবং হিজবুল্লাহর রাজনৈতিক শাখাকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসাবে চিহ্নিত করতে ইইউর অনিচ্ছার মূল কারণ ছিল। ইউরোপের মধ্যে মতামতের এই পরিসরটি ব্যাখ্যা করে যে ইইউ এর পক্ষে কেন এই সংকটের জন্য একটি সমন্বিত প্রতিক্রিয়া প্রণয়ন করাটা কঠিন।

শক্তিশালী ইসরায়েল-বিরোধী অবস্থানের দেশগুলির ক্ষেত্রে, ইরান এবং লেবানন, ইরাক এবং ইয়েমেনে তার মিত্ররা উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। ইসরায়েলের প্রতি তাদের শত্রুতার কারণ ধর্মীয় ও ভূ-রাজনৈতিক উভয়ই। ঐতিহাসিকভাবে, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ছিল, সোভিয়েত প্রভাব এবং আরব জাতীয়তাবাদের পারস্পরিক বিরোধিতার মাধ্যমে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। ইরানের মতো একই কারণে তালেবানরাও ইসরায়েল-বিরোধী অবস্থান নিয়েছে। সিরিয়া, বিশেষ করে আসাদ সরকারের অধীনে, আরেকটি ইসরায়েল-বিরোধী রাষ্ট্র, আংশিকভাবে যার কারণ হচ্ছে ইরানের সাথে জোট এবং গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলের দখলদারিত্বের চলমান ইস্যু, যে অঞ্চল তারা ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের সময় সিরিয়া থেকে দখল করেছিল।

আরব দেশগুলোর বাইরে গিয়ে লাতিন আমেরিকার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ক্রমবর্ধমান উত্তেজনাকে প্রতিফলিত করে। চিলি ও কলম্বিয়ার বামপন্থী সরকার সম্প্রতি ইসরায়েল থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতদের ফিরিয়ে নিয়েছে এবং বলিভিয়া সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। এই ঘটনাগুলি একটি বিস্তৃত বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া নির্দেশ করে, যা ঐতিহ্যগত আরব-ইসরায়েলি সংঘাত অঞ্চলের বাইরের দেশগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে। ইসরায়েল সম্পর্কে আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হওয়ার সাথে সাথে বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক দৃশ্যপট বিকশিত হতে থাকে, যাকে মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাতের প্রতি জোট পরিবর্তন এবং বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দ্বারা চিহ্নিত করা যায়।

তুরস্ক আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে একটি কৌতূহলজনক দৃষ্টান্ত উত্থাপন করে। সম্প্রতি তুরস্ক-ইসরায়েল সম্পর্কের উন্নতি হলেও গত মাসের ঘটনার পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ইসরায়েলের কঠোর সমালোচনা করেছেন। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এরদোয়ানের রেটোরিকগুলো কঠোর ছিল। ইজরায়েল নিয়ে তিনি বলেছেন, তারা তার সংবেদনশীলতা হারিয়েছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে এবং সেই সাথে তিনি ইজরায়েলের কর্মকাণ্ডকে একটি অপরাধ সিন্ডিকেটের সাথে তুলনা করেছে। একই সঙ্গে তিনি হামাসের প্রশংসা করেছেন এবং তাদেরকে তাদের ভূমি ও জনগণের রক্ষক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এরদোয়ানের অবস্থান আংশিকভাবে তুরস্কে তার নির্বাচনী ভিত্তি দ্বারা প্রভাবিত হয়, যা মূলত ফিলিস্তিনপন্থী, আর ইস্তাম্বুলে বড় আকারের সমাবেশ থেকে স্পষ্ট।

এরদোয়ানের এই দৃষ্টিভঙ্গি বিশেষত আরব বসন্তের পরে নিজেকে মুসলিম বিশ্বে শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার উচ্চাকাঙ্ক্ষা থেকেও উদ্ভূত। এই আকাঙ্ক্ষা তার বৈদেশিক নীতির সিদ্ধান্ত এবং জনসাধারণের বিবৃতিগুলিকে প্রভাবিত করে। অন্যান্য আরব রাষ্ট্রগুলোর দিকে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে দেখা যায়, ইসরায়েলের ব্যাপারে তাদের অবস্থান প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সূক্ষ্ম। ঐতিহাসিকভাবে, আরব দেশগুলি প্রধানত ইসরায়েল-বিরোধী ছিল, তবে সাম্প্রতিক প্রবণতাগুলি জনমত এবং অভিজাতদের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে পার্থক্য দেখায়।

সাধারণভাবে, আরব জনগণ শক্তিশালী ইসরায়েল-বিরোধী মনোভাব পোষণ করে, যার মূলে রয়েছে আরব-ইসরায়েলি সংঘাতের ইতিহাস এবং ফিলিস্তিনিদের সাথে সাংস্কৃতিক সংযোগ। তবে আরব এলিটরা বিভিন্ন কারণে ইসরায়েলের কাছাকাছি চলে আসছে। প্রাথমিকভাবে, তারা মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা চায়, এমনকি এর জন্য ইসরায়েলের সাথে শান্তি স্থাপন করতে হলেও। উপরন্তু, এর জন্য উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রণোদনাও রয়েছে। ইসরায়েলের তেলের প্রয়োজনীয়তা এবং আরব রাষ্ট্রগুলির তাদের অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনার জন্য ইসরায়েলি প্রযুক্তি এবং পরিষেবাগুলির আকাঙ্ক্ষা এদের মধ্যে পারস্পরিক সুবিধা বা মিউচ্যুয়াল বেনিফিটের জায়গা তুলে ধরে।

অধিকন্তু, অনেক আরব রাষ্ট্র এখন ফিলিস্তিনি ইস্যুটিকে ইরানের স্বার্থের সাথে যুক্ত বলে মনে করে। তাদের মতে, ফিলিস্তিনকে সমর্থন করা অজান্তেই ইরানের উপকারে আসতে পারে। দৃষ্টিভঙ্গির এই পরিবর্তনের ফলে চারটি আরব রাষ্ট্র – সংযুক্ত আরব আমিরাত, সুদান, বাহরাইন এবং মরক্কো – ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে। সাম্প্রতিক ঘটনার আগে সৌদি আরবও এই পথেই ছিল। এখন পর্যন্ত, বেশিরভাগ আরব রাষ্ট্র কঠোর শব্দযুক্ত বিবৃতি জারি করার জায়গায় নিজেদের প্রতিক্রিয়াকে সীমিত করেছে।

যাইহোক, যদি সংঘাত আরও বৃদ্ধি পায় এবং হুথি এবং হিজবুল্লাহর মতো অন্যান্য গোষ্ঠী জড়িত হয়, তবে এই আরব দেশগুলির মধ্যে আরও জোরালো প্রতিক্রিয়ার জন্য রাজনৈতিক চাপ তীব্রতর হতে পারে। এই পরিবর্তিত ভূদৃশ্য মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতির জটিলতাকে তুলে ধরে, যেখানে ঐতিহাসিক শত্রুতার সাথে সাথে ক্রমবর্ধমান কৌশলগত স্বার্থ এবং উদীয়মান আঞ্চলিক গতিশীলতার বিষয়গুলোও বিবেচ্য হয়ে উঠছে।

তথ্যসূত্র

1 – https://www.aljazeera.com/news/2023/10/27/unga-calls-for-humanitarian-truce-in-israel-hamas-war-how-countries-voted
2 – https://www.vox.com/2018/11/20/18080080/israel-palestine-us-alliance
3 – https://news.un.org/en/story/2023/10/1142507
4 – https://www.independent.co.uk/news/obituaries/general-alfredo-stroessner-412186.html
5 – https://en.wikipedia.org/wiki/Guatemalan_Civil_War
6 – https://www.washingtonpost.com/archive/politics/1986/12/12/israeli-economy-depends-on-nations-role-as-arms-exporter/2bc58146-54e7-4bd2-8c92-cb5a93ba28a3/
7 – https://merip.org/1986/05/israel-and-guatemala/
8 – https://en.wikipedia.org/wiki/1969_Paraguay_plan
9 – https://www.timesofisrael.com/citing-god-of-israel-papua-new-guinea-opens-jerusalem-embassy/
10 – https://www.theguardian.com/world/2023/oct/31/india-pro-israel-narendra-modi-bjp-government
11 – https://www.aljazeera.com/economy/2023/10/27/shifting-politics-make-india-a-hotbed-for-israel-hamas-war-misinformation
12 – https://www.theguardian.com/world/2023/oct/14/sunak-promises-israel-unqualified-support-in-face-of-evil-but-fails-to-mention-plight-of-gaza
13 – https://www.politico.eu/article/rishi-sunak-fires-government-aide-paul-bristow-after-he-calls-for-israel-hamas-ceasefire/
14 – https://www.aljazeera.com/news/2023/10/27/unga-calls-for-humanitarian-truce-in-israel-hamas-war-how-countries-voted
15 – https://x.com/spectatorindex/status/1718680770678796487?s=46
16 – https://www.jstor.org/stable/25834742
17 – https://www.ajc.org/news/the-eu-needs-to-designate-hezbollah-as-a-terrorist-organization
18 – https://www.huffpost.com/entry/iran-enemy-number-one_b_1861969
19 – https://www.livemint.com/news/world/israel-hamas-war-heres-the-list-of-nations-backing-palestinian-group-hamas-11697008553920.html
20 – https://www.nytimes.com/2023/10/25/world/middleeast/erdogan-turkey-hamas-israel.html

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.