বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো জীবন্ত কোষ দিয়ে সিলিকন ও কার্বনকে যুক্ত করলেন

পৃথিবীর ভু-ত্বকের প্রায় ৩০ শতাংশ সিলিকন আছে। বলা যায় অক্সিজেনের পর সিলিকনই আমাদের চারপাশে বেশী পরিমাণ বিদ্যমান। কিন্তু এই সিলিকনজৈব জীবন সৃষ্টিতে কোন ভূমিকা পালন করে না, এবং কোন পরিচিত জৈবই কার্বন শৃঙ্গলের সাথে এই সিলিকন সম্পৃক্ত নয়। তদুপরি সামান্য জেনেটিক কৌশল ঘটানোর পর বিজ্ঞানীরা ফাইনালি জীবিত কোষের সাথে সিলিকন এবং কার্বনকে একসাথে জুড়তে পেরেছে। এর ফলে শিল্প এবং ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন সুযোগ তৈরি হল।

সিলিকন সম্বলিত যৌগগুলো মধ্যে উপযোগ বা ব্যবহারের পরিসীমা থাকে, এবং সেগুলো শিল্পের অনুঘটক, সুপারকন্ডাক্টর, এবং মেডিক্যাল পণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া এই মেটেরিয়াল গুলো তৈরি করাও বেশ ব্যয় সাপেক্ষ্য এবং অত্যন্ত ব্যয়বহুল ট্রেস ধাতুর ব্যবহার প্রয়োজন হয়।

তাই ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির গবেষকরা এই মেটেরিয়াল গুলো তৈরি করতে অল্টারনেটিভ পদ্ধতি খোজার সিদ্ধান্ত নেন, প্রকৃতি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে। প্রথমত, তারা জৈব এনজাইমের ডাটাবেসের মাধ্যমে খোজা শুরু করেছিল যেগুলো ক্যাটালাইজিং সিলিকনে সক্ষম, এবং আয়রন ভিত্তিক এনজাইম শনাক্ত করে হাইড্রোজেনের সাথে সিলিকন বন্ধনে সহায়তা করে এমন একটি ব্যাক্টেরিয়ার মধ্যে। এই ব্যাক্টেরিয়াটির নাম Rhodothermus marinus এটি পাওয়া যায় উঞ্চ প্রস্রবণের গভীর জলের মধ্যে।

এরপর তারা এই প্রোটিনের জন্য জিনটিকে সিনথ্যাজাইজড করে ই-কলাই কোষের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়, এর ফলে ব্যাক্টেরিয়াটি সিলিকন এবং কার্বনের বন্ধন ঘটায় যখন নির্দিষ্ট সিলিকন সম্বলিত উপাদান খাওয়ানো হয়।এরপরেও, প্রতিবেদনে গবেষকরা লিখেন যে এই অনুঘটকের দক্ষতা আগ্রহজনক ছিল না।

সুতরাং তারা এনজাইমের জেনেটিক কোডকে সামান্য টুইক বা টান দেন, সামান্য মিউটেশনে সন্দেহজনকবশততারা এটি সিলিকন-কার্বন বন্ধনে অনুঘটকের জন্য সক্রিয় সাইট তৈরি করে। দেখুন, দেখুন তাদের সন্দেহটাই সঠিক হলো, যেহেতু পরিবর্তিত প্রোটিন বেশ দক্ষতার সাথে উপাদান দুটিকে যুক্ত করতে সক্ষম ছিল, এবফং এটি সবচেয়ে উন্নত শিল্পের ক্যাটালিস্টস এর তুলনায় ১৫ গুণ বেশী উৎপাদন করেছে।

তাদের লিখায় গবেষকরা দাবী করেন তাদের গবেষণার “ধারণার যথার্থতা যে প্রকৃতির প্রোটিন উপস্থাপন অভিযোজনের জন্য সবচেয়ে উদ্ভবযোগ্য এবং সুস্থিত,” আরো বলেন যে “সামান্য মিউটেশন দিয়েই বিদ্যমান প্রোটিন পুনরউদ্দেশ্যায়িত করে বেশ ভালভাবে রাসায়নিকটির বন্ধন গড়তে পারা যায় যা বায়োলজিতে দেখা যায়নি এবং রাসায়নিকের ক্ষেত্রেও প্রবেশ করেনি, এমনকি যা লিভিং সিস্টেমেও আবিষ্কার হয়নি”।

 

তথ্যসূত্রঃ

http://www.nature.com/news/living-cells-bind-silicon-and-carbon-for-the-first-time-1.21037

http://www.iflscience.com/technology/revolutionary-silicon-chip-makes-light-work/

http://science.sciencemag.org/content/354/6315/1048

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.