অক্সিজেন বা পানি ছাড়াই জীবন

A model of the azotosome. Image: James Stevenson.
A model of the azotosome. Image: James Stevenson.

সম্প্রতি রিসার্চারগণ এক ধরণের লাইফ ফর্ম এর কথা বলছেন যার গঠনের জন্য অক্সিজেন বা পানি কোন কিছুরই প্রয়োজন নেই।
আমাদের এই গ্রহটি এতটা ইউনিক কেন? লাইফ সাপোর্ট করে বলে? এখানে পানি, অক্সিজেন ও অন্যান্য উপাদান আছে যা অন্যান্য প্লানেটে এতটা পাওয়া যায় না তাই? যখন পৃথিবীর বাইরে জীবন খোঁজার প্রশ্ন আসে তখন অনেক এক্সপার্টই বলেন এবং বিশ্বাস করে থাকেন যে, পৃথিবীর বায়োডাইভার্সিটির মতই এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল বিয়িংদেরকেও জীবনে ধারণের জন্য পানির উপর নির্ভর করতে হবে। কিন্তু তাদের এক্ষেত্রে ভূল হবার কি কোন চান্স আছে? এরকমও কি কোন জীব থাকা সম্ভব না যারা পানি নামক এই মূল্যবান পদার্থটি ছাড়াই টিকে থাকতে পারে?
আমেরিকার Cornell University এর কেমিকেল ইঞ্জিনিয়ার ও সাইন্টিস্টগণ সম্প্রতি Science Advances জার্নালে একটি গবেষণা পাবলিশ করেছে যা বলছে পানির উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা আমাদের শরীরের কেমিস্ট্রির বাইরেও এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল লাইফ এর অস্তিত্ব থাকতে পারে।
তারা তাদের স্টাডিতে লিখেছেন, “পৃথিবীতে জীবনের ফাউন্ডেশন হল লিপিড বাইলেয়ার মেমব্রেন। আর এটা লিকুইড ওয়াটার ভিত্তিক বায়োলজির ছাড়া টিকবে না। আর তাই এস্ট্রোনোমারগণ হ্যাবিটেবল প্লানেট খূঁজতে হলে প্রথমেই দেখেন সেখানে পানি আছে কিনা।” তাদের প্রশ্ন “যে তাপমাত্রায় পানি তরল অবস্থায় থাকে তার অনেক দূরের তাপমাত্রাতেও কি কোনভাবে কার্যকর সেল মেমব্রেন এর তৈরি হওয়া সম্ভব?”
দলটির লিডার মলিক্যুলার ডাইনামিক্স স্পেশালিস্ট Paulette Clancy বলেছেন, “আমরা বায়োলজিস্ট নই, আর এস্ট্রোনোমারও নই। কিন্তু আমাদের কাছে সঠিক যন্ত্রপাতি রয়েছে। বোধহয় এটাই আমাদের সাহায্য করেছিল কারণ আমাদের কোন কনসেপশন ছিল না যে মেমব্রেনে কি থাকতে পারে আর কি থাকত পারে না। আমরা কেবল কম্পাউন্ডগুলো নিয়ে কাজ করেছি আর চিন্তা করেছি, আমাদের কাছে এটা থাকলে আমরা এটা নিয়ে কি কি করতে পারব।”
Cornell University এর এই দলটি একটি কোষ স্টিমুলেটিং করতে চেয়েছিল যা খুবই প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে যেমন শনির উপগ্রহ টাইটানে যা সৌরজগতের একমাত্র উপগ্রহ যেখানে খুবই মোটা বায়ুমণ্ডল আছে আর পৃথিবীর মত যার সারফেসে লিকুইড সাপোর্ট করে।
মাদারবোর্ড ম্যাগাজিনের তথ্য অনুসারে, Cornell University এর এই দলটি পরিচালিত হয় মলিক্যুলার ডাইনামিক্স স্পেশালিস্ট Paulette Clancy দ্বারা আর স্টাডির কো-অথর ছিল কেমিকেল ইঞ্জিনিয়ার James Stevenson এবং স্যাটার্নিয়ান মুন বা শনির উপগ্রহের এক্সপার্ট Jonathan Lunine। তাদের এই ডাইভার্স পারস্পেকটিভ থেকেই তারা একটা কোষ এর কল্পনা করেন যাদের নাম তারা দেন azotosome। নামটি এসেছে ফেঞ্চ শব্দ azote থেকে যার অর্থ হল নাইট্রোজেন।
এই হাইপোথেটিকাল লাইফ ফর্মটি গঠিত হবে নাইট্রোজেন, কার্বন এবং হাইড্রোজেন দিয়ে এবং সেটায় কক্ষ তাপমাত্রায় আমাদের পরিচিত হাইড্রো-অপারেটেড সেল মেমব্রেন এর মতই খুবই শীতল ক্রায়োজেনিক তাপমাত্রায় একই রকম ফ্লেক্সিবল, ডিউরেবল সেল মেমব্রেন থাকবে।
তাহলে কি আমরা পানি, অক্সিজেন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় এলিমেন্ট নিয়ে তৈরি যে জীবনটিকে চিনি তার সেরকমটা ছাড়াও জীবন এর অস্তিত্ব থাকতে পারে? তবে কি জীবন সম্পর্কে এখনও অনেক কিছুই আমাদের জানতে বাকি আছে? আর তাহলে কেনই বা আমরা পৃথিবীতে প্রাণের যে ফর্ম দেখি ঠিক সেরকম প্রাণের ফর্ম এর এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল লাইফ সারা মহাবিশ্ব জুড়ে খুঁজব?
http://advances.sciencemag.org/content/1/1/e1400067

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.