নারী ও পুরুষের শরীরে জিন প্রকাশের পার্থক্যের আবিষ্কার এবং লৈঙ্গিক সমতা নিয়ে নতুন প্রশ্ন

আমরা বেশিরভাগই নারী ও পুরুষের জেনেটিক পার্থক্যগুলোর সাথে পরিচিত। পুরুষের সেক্স ক্রোমোজোম হচ্ছে এক্স এবং ওয়াই, এবং নারীর দুটো এক্স ক্রোমোজোম থাকে। আমরা এও জানি যে এই ক্রোমোজোমগুলোর জিনগুলো নারী ও পুরুষের মধ্যে ভিন্নভাবে কাজ করতে পারে। কিন্তু একটি সাম্প্রতিক গবেষণাপত্র দাবী করছে যে, কেবল এক্স ওয়াই ক্রোমোজোমের জিনই নয়, বরং আমাদের জিনোমের এক তৃতীয়াংশই নারী ও পুরুষের শরীরে ভিন্নভাবে আচরণ করে। এই নতুন আবিষ্কার বিজ্ঞান, চিকিৎসা এমনকি লৈঙ্গিক সমতার ক্ষেত্রেও নতুন চ্যালেঞ্জ সামনে আনতে যাচ্ছে।

 

মানব জিনোম

নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রায় ২০,০০০ জিন রয়েছে। আর জেনেটিক মেকাপের যে অংশ নারী ও পুরুষের মধ্যে পার্থক্যের সৃষ্টি করে তা হলে সেক্স ক্রোমোজোম। কেবল পুরুষেরই ওয়াই ক্রোমোজোম আছে। যদিও উভয় লিঙ্গেই এক্স ক্রোমোজোম আছে, তবুও পুরুষের দেহে এটির একটি কপি থাকে, আর নারীর দেহে থাকে দুটি।

মানুষের ওয়াই ক্রোমোজোমে মাত্র ২৭টি জিন থাকে। এই ২৭টি জিনের মধ্যে মাত্র একটি হচ্ছে সেক্স ডিটারমিনিং রেজিয়ন ওয়াই জিন বা লিঙ্গ নির্ধারক অঞ্চল ওয়াই জিন (সংক্ষেপে SRY)। ওয়াই ক্রোমোজোমের এই জিনগুলো সেই পথের সূচনা করে যা ভ্রূণের দ্বাদশ সপ্তাহে অনেকগুলো কোষের সমষ্টি নিয়ে একটি শুক্রাশয় তৈরি করে।

সাম্প্রতিক সময়ের আগে অনেকেই বিশ্বাস করতেন যে এই SRY এর উপস্থিতি – অনুপস্থিতিই নারী ও পুরুষের মধ্যে পার্থক্যের সৃষ্টি করে। পূর্বের গবেষণাগুলোতে দেখা গিয়েছিল ওয়াই ক্রোমোজোমের আরও ২৬টি জিন রয়েছে যেগুলোর এক্ষেত্রে প্রভাব থাকে, আর এও বলা হয়েছিল যে এক্স ক্রোমোজোমেরও আরও একশটির মত জিন নারীর ক্ষেত্রে দুই ডোজে সক্রিয় এবং পুরুষের মধ্যে এক ডোজে সক্রিয় থেকে এদের মধ্যে পার্থক্যের সৃষ্টি করতে পারে। এও ধারণা করা হয়েছিল যে আরও কয়েক শত জিন থাকতে পারে যেগুলো এক্স ওয়াই ক্রোমোজোমের জিন (সংক্ষেপে এক্স ওয়াই জিন) দ্বারা সরাসরি বা এক্স ওয়াই জিনের কারণে নির্গত হরমোন দ্বারা প্রভাবিত হয়। কিন্তু নতুন এই গবেষণাটি আমাদেরকে বলছে যে এই ধারণা করা জিনের পরিমাণটা অনেক কম ছিল।

 

জিন, প্রোটিন এবং টিস্যু

জিন হচ্ছে ডিএনএ এর লম্বা সুতার অংশ। আর এই ডিএনএ হচ্ছে এমন একটি অণু যা চারটি বেজ দ্বারা গঠিত। বেজ (base) অর্থ ক্ষারক, এগুলো হচ্ছে নাইট্রোজেনাস বেজ বা নাইট্রোজেনজাত ক্ষারক, এগুলো কিছু ক্ষারকের ধর্ম প্রদর্শন করে থাকে তাই এদেরকে বেজ বলা হয়। এই বেজগুলোর সিকুয়েন্স বা ক্রম শরীরের জন্য প্রোটিন এনকোড করে।

এই প্রোটিন এনকোড করার ব্যাপারটা একটু ভেঙ্গে বলি। ডিএনএ-তে যে চার রকমের নাইট্রোজেনাস বেজ থাকে, সেগুলো হচ্ছে এডেনিন (A), থাইমিন (T), গুয়ানিন (G), এবং সাইটোসিন (C)। এই চার ধরণের বেজই বিভিন্ন ধরণের প্রোটিন তৈরির জন্য দায়ী। এদিকে প্রোটিন তৈরি হয় এমিনো এসিড দিয়ে। ২০ ধরণের এমিনো এসিড বিভিন্ন ক্রমে ও বিভিন্ন সংখ্যায় বিভিন্ন ধরণের প্রোটিন তৈরি করে যেগুলো আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরণের বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ডিএনএ এর এই চার ধরণের বেজ কিভাবে ২০ ধরণের এমিনো এসিডকে কোড করে, বা তৈরির জন্য দায়ী হয়। এক্ষেত্রে আগে একটা জিনিস বলে নেই, কোড করার কাজটা ডিএনএ তে হয় না, হয় একধরণের আরএনএ-তে যাকে বলা হয় মেসেঞ্জার আরএনএ, সংক্ষেপে mRNA। আর এই mRNA তে থাইমিন (T) আর থাইমিন না থেকে ইউরাসিল (U) – এ রূপান্তরিত হয়ে যায়। তাহলে কোড করার জন্য যে বেজগুলো থাকছে সেগুলো হল এডেনিন, ইউরাসিল, গুয়ানিন আর সাইটোসিন, সংক্ষেপে A,U,G,C।

তো, একটা জিনিস ভেবে দেখুন, বেজ চারটা হলেও যদি এই চারটা বেজ দুটো দুটো করে কম্বিনেশন তৈরি করে তাহলে ৪*৪=১৬ টি ভিন্ন কম্বিনেশন তৈরি হয়, কিন্তু সেটাও ২০ রকম এমিনো এসিড গঠনের জন্য যথেষ্ট নয়, তবে যদি তিনটি বেজকে নেয়া হয় তাহলে এদের মোট কম্বিনেশন হবে ৪*৪*৪=৬৪টি। হ্যাঁ, এখন এদের দ্বারা ২০টি এমিনো এসিড তৈরি সম্ভব। এই চৌষট্টি কম্বিনেশনের একেকটিকে বলা হয় কোডন। একটি এমিনো এসিড তৈরির জন্য একাধিক কোডন কাজ করতে পারে। যেমন ফিনাইলএনালিন নামক এমিনো এসিডটিকে কোড করার জন্য দায়ী কোডন হচ্ছে UUU ও UUC। UUU অর্থ হল কম্বিনেশনে পরপর তিনটি বেজ ইউরাসিল, UUC অর্থ হচ্ছে কম্বিনেশনের প্রথম দুটি বেজ হচ্ছে ইউরাসিল আর তৃতীয়টি হচ্ছে সাইটোসিন।

এছাড়া এই কোডনগুলোর মধ্যে তিনটি স্টপ কোডনও আছে, যেগুলো এমিনো এসিড কোড না করলেও এগুলোর এমিনো এসিডকে কোড করা বা এমিনো এসিডের চেইন তৈরি করার বন্ধের সংকেত দেয়। অর্থাৎ একটি জিনের কোডনের সিকোয়েন্সে বা ক্রমে যদি স্টপ কোডন চলে আসে, তাহলে এর অর্থ হবে এখানেই এমিনো এসিড এর চেইন তৈরি শেষ বা জিনটি এই পর্যন্তই কাজ করছে। এই তিনটি কোডন হচ্ছে UAA, UGA ও UAG। এরকমই বিভিন্ন কোডনের সিকোয়েন্স মিলেই একটি জিনের গঠন যার শেষে থাকে এই তিনটি স্টপ কোডনের একটি। আর প্রোটিন এনকোডের জন্য এরা আসলে একটা ছাঁচ বা টেমপ্লেট হিসেবে কাজ করে। প্রথমে আরএনএ পলিমারেজ এনজাইম এর সাহায্যে ডিএনএ এর থেকে কপি করে এমআরএনএ তৈরি হয় (এখানেই থাইমিন ইউরাসিল হয়ে যায়), আর সেখানে বিভিন্ন এমিনো এসিড গিয়ে সেই কোডনের সিকুয়েন্স এর ছাঁচ অনুযায়ী নির্দিষ্ট এমিনো এসিডের সিকোয়েন্স এর চেইন তৈরি করে যাদেরকে পলিপেপটাইড বলে। এক বা একাধিক পলিপেপডাইড পেপটাইড বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে প্রোটিন তৈরি করে। সাধারণত একটি জিন একটি পলিপেপটাইড তৈরি করে, কিন্তু অলটারনেটিভ স্প্লাইসিং বা ডিফারেনশিয়াল স্প্লাইসিং নামে একটি মেকানিজম আছে যেক্ষেত্রে একটি জিন একাধিক প্রোটিন তৈরি করতে পারে। এই সব কাজই হয় একটি কোষে।

মানুষের শরীরে প্রায় ২০,০০০ টি জিন আছে যেগুলো বিভিন্ন ধরণের প্রোটিন তৈরির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের কাজে জড়িত। এদের মধ্যে কোনটা এমন প্রোটিন তৈরি করে যা আমাদের চামড়া বা চুল তৈরীর জন্য দায়ী হয়, কোনটা মাংশপেশিকে সংকোচন-প্রসারণ করায়, কোনটা রক্তে অক্সিজেন বহন করায়, কোনটা এনজাইম হিসেবে শরীরের প্রয়োজনীয় বিক্রিয়া করায় এবং খাদ্যকে শক্তি ও শরীরের অংশে (ক্ষয় পূরণ) রূপান্তরিত করে।

আগেই বলে নিয়েছি যে জিন তাদের কপি তৈরির মাধমে কাজ করে, ডিএনএ এর বেজ এর ক্রম কপি হয়ে আরএনএ অণু তৈরি করে, আর সেগুলোই প্রোটিন তৈরির জন্য কাজ করে। একটা জিন যত বেশি আরএনএ তৈরি করবে, এটা তত বেশি প্রোটিন তৈরি করবে। আর এখন একটা জিন কতগুলো আরএনএ কপি তৈরি করতে পারে তা পরিমাপ করা যায়। একটি সক্রিয় জিন কয়েক হাজার আরএনএ কপি তৈরি করতে পারে, আর একটি ইনেকটিভ জিন কয়েকটি কপিও তৈরি করতে পারে, আবার কোন কপি নাও তৈরি করতে পারে।

আবার জিনের কার্যক্রমের উপর এপিজেনেটিক প্রভাবও কাজ করে যেগুলো জিনের অনেক কাজকেই পরিবর্তিত করে দেয়। এই নিয়ন্ত্রণের ফলে শরীরের একেকটি টিস্যুর কোষ একেক রকম কাজ করে। যেমন আমাদের লিভার বা যকৃতের কোষ এবং আমাদের মস্তিষ্কের কোষে একই ধরণের জিন থাকে, কিন্তু এদের প্রকাশ মস্তিষ্কে এক রকম আর যকৃতে এক রকম হয়। মস্তিষ্কের কোষগুলোয় মোট জিনের একটি অংশ কাজ করে, আর যকৃতের কোষে কাজ করে অন্য অংশ।

 

পুরুষ ও নারীর ক্ষেত্রে জিনের কার্যক্রম

নতুন গবেষণাটিতে গবেষক মোরান গারশনি এবং শ্মুয়েল পিয়েত্রোকভস্কি দেখার চেষ্টা করেন কীভাবে নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে একই জিন এরকম সক্রিয় থাকে। তারা ৫৪৪ জন মৃত ব্যক্তির শরীর থেকে (৩৫৭ জন পুরুষ, ১৮৭ জন নারী) ৫৩টি ভিন্ন ভিন্ন টিস্যুর (এদের মধ্যে ৪৫টি নারী ও পুরুষ উভয়ের মধ্যেই থাকে) ১৮,৬৭০টি জিন থেকে কী পরিমাণ আরএনএ তৈরি হয় তা হিসাব করেন। তারা আবিষ্কার করেন, এই জিনগুলোর এক তৃতীয়ংশ (৬,৫০০ এরও বেশি) নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে খুব ভিন্নভাবে কাজ করছে। দেখা গেল কিছু জিন শুধু পুরুষের বেলায় সক্রিয় আর কিছু জিন শুধু নারীদের বেলায় সক্রিয়। এছাড়া অনেক জিনই আছে যা একটি লিঙ্গের তুলনায় অন্য লিঙ্গে অনেক বেশি সক্রিয়তা দেখায়।

এই জিনগুলোর মধ্যে কয়েকটি শরীরের সকল টিস্যুতেই সেক্স বায়াজড বা লিঙ্গ পক্ষপাতী আচরণ করে (ভিন্ন লিঙ্গে ভিন্ন আচরণ)। তবে বেশিরভাগ জিনই এক বা কয়েকটি টিস্যুর উপরেই লিঙ্গ পক্ষপাতিত্ব দেখায়। আর এই জিনগুলোর বেশিরভাগই সেক্স ক্রোমোজোমের জিন নয়, খুব কম জিনই এক্স ও ওয়াই ক্রোমোজোমের হয়ে থাকে। কিন্তু কিভাবে আমাদের মোট জিনের এক তৃতীয়াংশ নারী ও পুরুষের বেলায় ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে নিয়ন্ত্রিত হয়?

এখন আমরা জানি যে প্রোটিন একটি বিস্তৃত নেটওয়ার্কে কাজ করে। এর ফলে যদি একটি জিনের দ্বারা তৈরি হওয়া প্রোটিনের পরিমাণকে পরিবর্তিত করে দেয়া যায় তাহলে অনেকগুলো জিনের দ্বারা তৈরি সব প্রোটিনের পরিমাণও পরিবর্তিত হয়ে যায়। আমরা এও জানি যে জিনের কার্যক্রমে হরমোনগুলোর একটি শক্তিশালী ভূমিকা রয়েছে। যেমন, টেস্টোস্টেরন এবং এস্ট্রোজেন আমাদের শরীরের প্রজনন তন্ত্র এবং শরীরের অন্যান্য অংশের টিস্যুর অনেক জিনকেই সক্রিয় বা নিষ্ক্রিয় করে।

 

শারীরিক বৈশিষ্ট্যের উপর প্রভাব

লিঙ্গ পক্ষপাতী জিনগুলোর কার্যক্রমগুলোয় কিছু যুক্তিও খুঁজে পাওয়া যায়। এদের বেশিরভাগই প্রজননতন্ত্রে প্রভাব ফেলে, যেগুলো নারী ও পুরুষের বেলায় খুব ভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন এই নতুন গবেষণাটিতে দেখা যায় ম্যামারি গ্ল্যান্ড বা স্তনগ্রন্থিতে সর্বোচ্চ পরিমাণে নারী পক্ষপাতী জিনের প্রকাশ পাওয়া গেছে, অন্য দিকে টেস্টিস বা শুক্রাশয়ে সর্বোচ্চ পরিমাণে পুরুষ পক্ষপাতী জিনের প্রকাশ পাওয়া গেছে।

অন্যান্য লিঙ্গ পক্ষপাতী জিনকে ত্বক (বিশেষ করে লোম থাকার পরিমাণ), পেশি, ফ্যাট টিস্যু বা মেদ কলা, হৃৎপিণ্ড ইত্যাদির সাথে সম্পর্কিত হতে দেখা গেছে যেগুলো শরীরের গঠন এবং শ্বসন বা মেটাবলিজমের ক্ষেত্রে লিঙ্গদ্বয়ের মধ্যে পার্থক্যের সৃষ্টি করে। পূর্বের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিল লিঙ্গ পক্ষপাতী জিন মস্তিষ্কের ক্রিয়ার সাথেও সম্পর্কিত, যা নারী ও পুরুষের আচরণের পার্থক্য নিয়ে বিতর্কটি পুনরায় শুরু করে।

 

রোগের প্রতি সংবেদনশীলতার উপর প্রভাব

এই নতুন গবেষণাটি ব্যাখ্যা করে যে প্রায়ই কেন নারী ও পুরুষ বিভিন্ন রোগের প্রতি ভিন্ন ভিন্নভাবে সংবেদনশীল হয়, এবং কেন উভয় লিঙ্গের বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে নারী ও পুরুষের চিকিৎসা ভিন্ন রকমের হওয়া উচিৎ। অনেক দিন ধরেই এটা জানা যে অনেক রোগের বেলাতেই পুরুষদেরকে বেশিরভাগ সময় আক্রান্ত হতে দেখা যায় (যেমন পারকিনসন), আবার অনেক রোগের বেলায় নারীদেরকে বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যায় (যেমন মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস)। এই গবেষণাটিতে দেখা যায়, কিছু সেক্স বায়াজড বা লিঙ্গ পক্ষপাতী জিন রোগের সাথে সম্পর্কিত। যেমন দেখা যায়, একটি নারী পক্ষপাতী জিনের সাথে কার্ডিওভাস্কুলার হোমিওস্টেসিস এবং অস্টিওপোরোসিস এর সম্পর্ক আছে, আবার একটি পুরুষ পক্ষপাতী জিনের সাথে উচ্চ রক্তচাপের সম্পর্ক পাওয়া গেছে।

নতুন গবেষণায় ড্রাগ মেটাবলিজম বা ওষুধের শ্বসনের উপরেও জিনের প্রকাশের ভিন্নতা খুঁজে পেয়েছে। জানা গেছে যে কেন নারী ও পুরুষ একই ওষুধে ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়। অরগানাইজেশন ফর দ্য স্টাডি অফ সেক্স ডিফারেন্সেস থেকে ইতিমধ্যেই ক্লিনিকাল ট্রায়ালে নারীদেরকে যুক্ত করার জন্য ক্যাম্পেইন শুরু করা হয়েছে। এই নতুন আবিষ্কারটি তাদের এই ক্যাম্পেইনকে আরও শক্তিশালী করবে।

যাই হোক, নতুন এই আবিষ্কারটি আমাদেরকে বলছে নারী ও পুরুষের মাঝের লৈঙ্গিক পার্থক্য আমরা আগে যা জানতাম তার থেকেও আরও গভীর। জেন্ডার ইকুইটি বা লৈঙ্গিক সমতার ক্ষেত্রে এই নতুন আবিষ্কারটি কিভাবে প্রভাব ফেলতে পারে তা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এখানে খারাপ বিষয়টি হল, এই আবিষ্কারের ফলে যদি নারী ও পুরুষ সম্পর্কিত স্টেরিওটাইপগুলো আরও বৃদ্ধি পায় তাহলে তা লৈঙ্গিক সমতার জন্য ক্ষতিকর হবে। তাই এই বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকা উচিৎ যাতে এই আবিষ্কার কোন রকম জেন্ডার স্টেরিওটাইপকে প্রমোট না করে। আর ভাল বিষয়টি হল এই আবিষ্কারের ফলে ঔষধ ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে সেক্স ডিফারেন্স বা লৈঙ্গিক পার্থক্য যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তা এই আবিষ্কারটির ফলে স্বীকৃত হবে। এরফলে নারীদের জন্যেও আলাদাভাবে ক্লিনিকাল ট্রায়াল হবে, পুরুষকে যেভাবে চিকিৎসা করা হয়, ওষুধ দেয়া হয় সেগুলো তাদের উপর চাপিয়ে না দিয়ে ভিন্নভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। এতে নারী স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে আর চিকিৎসা ক্ষেত্রে লৈঙ্গিক সমতাও প্রতিষ্ঠিত হবে।

 

 

তথ্যসূত্র:

  1. https://doi.org/10.1186/s12915-017-0352-z
  2. https://theconversation.com/how-many-genes-does-it-take-to-make-a-person-64284
  3. https://ghr.nlm.nih.gov/gene/SRY
  4. http://www.cell.com/cell-reports/fulltext/S2211-1247(15)01491-6
  5. http://www.sparknotes.com/biology/molecular/geneticcode/section1.rhtml
  6. http://www.nsta.org/publications/news/story.aspx?id=52606
  7. https://www.nature.com/articles/ncomms3771
  8. https://www.ncbi.nlm.nih.gov/books/NBK53393/
  9. https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/27267697
  10. http://www.ossdweb.org/
  11. https://www.theguardian.com/lifeandstyle/2015/apr/30/fda-clinical-trials-gender-gap-epa-nih-institute-of-medicine-cardiovascular-disease

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.