বিজ্ঞানীরা সোলার এনার্জি ব্যবহার করে সহজেই লবণাক্ত জলকে পরিষ্কার খাবার জলে রুপান্তরিত করেছেন

বিজ্ঞানীরা শুধু মাত্র সোলার এনার্জি ব্যবহার করে লোনা জলকে ফ্রেস জল করার উপায় পেয়েছেন। এটা লবণাক্ত দূরীকরনের কৌশলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সাফল্য হতে পারে।

বর্তমানে লবণাক্ততা দূরীকরণে যে সব প্লান্ট-এ শক্তি ব্যবহার হয় তা অনেক ব্যয়বহুল। ১৫০ টা দেশে প্রায় ১৮০০০ প্লান্ট রয়েছে। এখন লবণাক্ত জলকে ফুটিয়ে তা বাষ্পকে ঘণ করে লবণাক্ততা দূর করতে হয়। এতে প্রচুর তাপের প্রয়োজন হয় জল ফুটাতে যদিও লবণাক্ততা দূরীকরণ সমস্ত প্লান্টের অর্ধেক খরচ ব্যয় হয় জলফুটাতে।

এই নতুন গবেষণাটি প্রকাশিত হয় প্রসিডিং অফ দ্যা ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্স-এ, বলা যায় এটি বর্তমান অবস্থা পরিবর্তন করে দিতে পারে। টেক্সাসের রাইস ইউনিভার্সিটি এর সেন্টার ফর ন্যানোটেকনোলজি এনাবলড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট কর্তৃক পরিচালিত হয় এই গবেষণা।

“সরাসরি সোলার লবণাক্তদূরীকরণ পৃথিবীর ১ বিলিয়ন মানুষের জন্য যারা পরিষ্কার পানীয় জলের অভাবে আছে তাদের অবস্থা পরিবর্তন করে দিতে পারে” বলেন রাইস বিজ্ঞানী এবং ওয়াটার ট্রিটমেন্ট বিশেষজ্ঞ কুইলিন লি এক বিবৃত্তিতে। তিনি এই গবেষণার কোরেস্পন্ডিং অথর।

“এই অফ-গ্রিড টেকনোলজি একটা কম্পেক্ট ফুটপ্রিন্ট এর মধ্যে পরিবারের ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত পরিষ্কার জল সরবরাহ করতে সক্ষম, এবং এটাই আসতে আসতে আনুপাতিক হারে বড় কমুনিটির জন্য পর্যাপ্ত জল সরবরাহ করতে পারে”।

তাদের টেকনিকটাকে বলা হচ্ছে ‘মেমব্রেইন ডিস্টিলেশন’ বা ‘ঝিল্লি পাতন’। গরম লোনা জল ছাকনীর এক পাশে প্রবাহিত হয় এবং ঠান্ডা পরিষ্কার জল আরেকপাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়। জলীয়-বাষ্প স্বাভাবিকভাবেই গরম পাশ থেকে ঠান্ডা পাশে ছাকনীর মাধ্যমে টানা হয়, কারণ সমুদ্রপৃষ্ঠে ফুটানোর প্রয়োজন নেই, শক্তির প্রয়োজনীয়তা গতানুগতিক পাতনগুলির চেয়ে কম । যাইহোক এনার্জি খরচ এখনো গুরুত্বপূর্ণ কারণ তাপ ক্রমাগত হারিয়ে যায় ছাকনীর গরম পাশ থেকে ঠান্ডা পাশে দিকে গিয়ে।

ন্যানোটেকনোলজি এনাবলড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট (NEWT)-এর টেকনোলজি অনেক বেশী ফলপ্রসূ। এটায় প্রকৌশলি ন্যানোপার্টিক্যাল ব্যবহার করা হয় যা সূর্যরশ্মিকে তাপে রুপান্তরিত করে। এটা মেমব্রেইনে(ঝিল্লি) যুক্ত করার মানে হচ্ছে এটা নিজে নিজেই উত্তাপ হয়, তাই প্রচুর পরিমাণ এনার্জি জল গরম করার জন্য প্রয়োজন হয় না। এটাকে বলা হয় “ন্যানোফোটোনিকস যুক্ত সোলার মেমব্রেইন ডিস্টিলেশন” টেকনোলজি অথবা NESMD.

কনসেপ্ট এক্সপেরিমেন্টের প্রমাণের মধ্যে গবেষক দলটি তিনটি ডাকটিকিট আকারের পরিমাপের একটি NESMD চেম্বার ব্যবহার করে, এটি কয়েক মিলিমিটার পুরু। তারা প্রায় ৬ লিটার পরিষ্কার জল পেয়েছে প্রতি স্কয়ার মিটার প্রতি ঘন্টায়।

মূল পরিকল্পনা হচ্ছে লোকজন যাতে এই টেকনোলজির উপর নির্ভর করে তাদের চাহিদা অনুযায়ী প্যানেল সংগ্রহ করতে পারে তাদের দৈনন্দিন জলের চাহিদা অনুসারে।

কুইলিন লি বলেন, ‘জল উৎপাদনের হারের উপর নির্ভর করে আপনার প্রয়োজন মাফিক হিসাব করে যতটা মেমব্রেই বা ঝিল্লির প্রয়োজন তা নিতে পারেন,” উদাহরণ স্বরুপ, আপনার যদি ২০ লিটার জলের প্রয়োজন হয় প্রতি ঘন্টায় এবং প্যানেল গুলো প্রতি স্কোয়ার মিটারে প্রতি ঘন্টায় ৬ লিটার জল উৎপাদন করে, এভাবে হিসাব করে আপনার প্রয়োজন হবে প্যানেলের ৩ স্কোয়ার মিটারের কিছু বেশী”।

সোর্স

  1. http://www.pnas.org/content/early/2017/06/14/1701835114
  2. http://www.newtcenter.org/
  3. http://news.rice.edu/2017/06/19/freshwater-from-salt-water-using-only-solar-energy-2/

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.