স্মার্ট সেক্স টয়, এর ডেটা ট্রান্সফার করার ক্ষমতা এবং প্রাইভেসি নিয়ে সমস্যা

আপনার ফোন, ল্যাপটপ, আপনার ঘড়ি, টিভি, অথবা আপনার গাড়ি- যদি এগুলো ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত থাকে, তাহলে আপনার প্রাইভেসি বা নিরাপত্তা ভাঙ্গার সুযোগ রয়ে যায়। এটাও সত্য যে ব্লুটুথ এবং ওয়াইফাই যুক্ত সেক্স টয়ের জন্যও একইভাবে নিরাপত্তার সমস্যা রয়েছে।

২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে DEF CON 24 Hacking conference এর দুইজন হ্যাকার নির্দেশনা দেন যে, স্ট্যান্ডার্ট ইনভেশন কর্পোরেশনের তৈরি We-Vibe 4 Plus নামক সেক্স টয়টি এর ব্যবহারের ডেটা রেকর্ড করতে এবং ব্যবহারকারীর সেই সেক্স টয় ব্যবহার করার তথ্য অন্য কোথাও প্রদান করতে সক্ষম।

ইলিনয়েসের এক মহিলা এই সেক্স টয় কোম্পানিকে কোর্টে দাঁড় করিয়েছেন এই অভিযোগে যে তার ব্যক্তিগত ব্যবহারের তথ্য এই তার ডিভাইসের মাধ্যমে এই কোম্পানি ফাঁস করেছে। কোম্পানি ব্যক্তিগত ভোক্তা অধিকার আইন সহ আরও বেশ কিছু আইন ভেঙ্গেছে দাবী করে ভদ্রমহিলা সেই কোম্পানির কাছে ক্ষতিপুরণ দাবী করেছেন।

এই We-Vibe 4 Plus ভাইব্রেটরটা ব্যবহারকারীর সেক্স টয় তাদের স্মার্টফোনের সাথে ব্লুটুথ এবং ইন্টারনেট দিয়ে যুক্ত করা যায়। We-Connect এপ্লিকেশন দিয়ে বিভিন্ন ভাইব্রেশন যেমন plus, waves, echo, bouch, ebong cha-cha-cha এর সেটিংসের মাধ্যমে এডজাস্ট করা যায়। সঙ্গীর পরামর্শেও দূর হতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সেটিংস নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

কোর্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী অভিযোগে বলা হয় ডিভাইসটি দিয়ে প্রতি ব্যবহারের সময় ও তারিখ, ব্যবহারকারীর নির্ধারণ করা ভাইব্রেশনের মাত্রা, ভাইব্রেশন মোড অথবা ব্যবহারকারী পছন্দের প্যাটার্ন ও We-Vibe কাস্টোমারের ইমেইল এড্রেস এর মত তথ্য প্রেরণ করা যায়।

DEF CON এর হ্যাকারদের অভিযোগের উত্তরে We-Vibe তাদের বিবৃতিতে জানান, ক্রেতারা নিজের নাম, ঠিকানা, অথবা একাউন্ট তৈরি না করেও এই ভাইব্রেটর এবং এপটি ব্যবহার করতে পারেন। তবুও তারা এক্সটারনাল প্রাইভেসি এবং ডেটা সিকিউরিটি এক্সপার্টদের দ্বারা তাদের এরকম তথ্য সংগ্রহের ব্যাপারটি পর্যালোচনা করাবেন।

তারা আরো বলেন, “আমাদের পণ্যের উন্নয়নের সাহায্য এবং ডায়াগনোস্টিক উদ্দেশ্যে আমরা নির্দিষ্ট কিছু সীমিত তথ্য সংগ্রহ করি। চর্চার বিষয়ে আমরা ডেটাগুলোকে একটি সমষ্টিগত এবং অ-সনাক্তকরণযোগ্য আকারে সংগ্রহ করি… ভাইব্রেশন ইনটেন্সিটি নিয়ে যে ইন্টিগ্রেটেড ফর্মে ডেটা সংগ্রহ করি সেটা আমাদেরকে বুঝতে সাহায্য করি যে, কিভাবে আমাদের প্রোডাক্টের ফিচারগুলোকে ব্যবহার করা হচ্ছে”।

অনেক জনপ্রিয় স্মার্টফোনের এপগুলোর মাধ্যমে হস্তান্তর করা তথ্যের পরিমাণ বিবেচনা করলে, হয়তো এরকম ডেটা ট্রান্সফারের ব্যাপারটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু সমস্যাটা এখানেই যে, এই বিশেষ এপটি অবশ্যই একটি “ব্যক্তিগত ব্যাপার”। যাই হোক, এটা আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে, এই অল-কানেক্টেড জগতে নিজের ব্যক্তিগত উপাত্তসমূহের ব্যাপারে মনোযোগী হওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

 

তথ্যসূত্র:

  1. https://www.defcon.org/html/defcon-24/dc-24-speakers.html#follower
  2. http://we-vibe.com/we-vibe-4-plus
  3. http://www.courthousenews.com/2016/09/08/avant-garde-sex-toys-caught-in-data-dilemma.htm
  4. http://we-vibe.com/blog/our-commitment-to-customer-privacy-and-security/
  5. http://www.iflscience.com/technology/smart-sex-toy-company-accused-of-collecting-intimate-data/

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.