রোবটিক্সের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা: জীবন্ত টিস্যু থেকে তৈরি বায়োহাইব্রিড এবং অর্গানিক রোবট

বায়োহাইব্রিড সি স্লাগ

কোন ট্রেডিশনাল রোবটের কথা চিন্তা করলে আপনার চোখে কী ভেসে ওঠে? বেশিরভাগ সময়ই নিশ্চই মেটাল বা প্লাস্টিকের দ্বারা তৈরি কোন রোবটি ভেসে ওঠে, যেমন “নাটস এন্ড বোল্টস” রোবটেরা অবশ্যই কোন শক্ত মেটারিয়াল দ্বারা গঠিত। যেহেতু রোবটদেরকে ল্যাবের কাজ ছাড়াও নানান ধরণের কাজ করতে হয়, তাই এরকম রিজিট সিস্টেম বা শক্ত কাঠামো কখনও কখনও এরা যেসব মানুষের সাথে কাজ করবে তাদের জন্য সেফটি রিস্ক তৈরি করতে পারে। যেমন যদি একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবট কোনভাবে মানুষকে আঘাত করে তাহলে এতে ব্রুইসেস অথবা বোন ড্যামেজের সম্ভাবনা থাকে।

গবেষকগণ তাই এখন রোবটকে আরও নরম এবং শিষ্ট করে তোলার চেষ্টা করছেন। তারা ভাবছেন, রোবটগুলোকে শক্ত মেশিনের মত না হয়ে বরং প্রাণীদের মত হবে। এদের ক্ষেত্রে মোটরের মত ট্রেডিশনাল একচুয়েটরের সাথে এয়ার মাসল ব্যবহার করা যেতে পারে, অথবা মোটরগুলোর সমান্তরালে স্প্রিং ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন হোয়েগ রোবটদের ক্ষেত্রে একটি মোটর এবং হুইল লেগ (হোয়েগ) একটি স্প্রিং থাকে। এর ফলে যদি সেই রোবটটি কোন মানুষকে আঘাত করে ফেলে তাহলে সেই স্প্রিং রোবটটির কিছু শক্তি শোষণ করে নিতে পারে যাতে লোকটি আঘাত না পান। রুমবা ভ্যাকুয়ামিং রোবটের বাম্পার আরেকটি উদাহরণ হতে পারে। এখানেও স্প্রিং থাকে যাতে রুমবা রোবটটি যেখানে বাম্প করে সেই জায়গায় ড্যামেজ না হয়।

কিন্তু এখন বিজ্ঞানীরা একটু অন্যভাবে বিষয়টার সমাধান করতে চাইছেন। আর এই বিশেষ উপায়টি নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। গবেষকগণ রোবটিক্স এবং টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিংকে কাজে লাগিয়ে এক ধরণের রোবট তৈরি করার চেষ্টা করছেন যা জীবন্ত মাসল টিস্যু বা কোষ থেকে শক্তিগ্রহণ করবে। এই ডিভাইসটিকে বিদ্যুৎ বা আলোর সাহায্যে স্টিমুলেট করা যেতে পারে যাতে কোষগুলো এর স্কেলেটনকে বাঁকাতে পারে যার ফলে রোবটটি সাঁতরাতে বা ক্রল করতে সক্ষম হয়। এর ফলে যে বায়োবট তৈরি হয় তা ঘুরে বেড়াতে পারে এবং এরা প্রাণীর মতই নরম। তারা মানুষের জন্য নিরাপদ এবং ট্রেডিশনাল রোবটদের তুলনায় পরিবেশের জন্য কম ক্ষতিকারক। আর যেহেতু প্রাণীদের মতই মাসল বা পেশিকে শক্তিপ্রদান করার জন্য তাদের নিউট্রিয়েন্টস বা পুষ্টির প্রয়োজন হয়, তাই এর কোন ধরণের ব্যাটারির প্রয়োজন হয় না। এছাড়া এই বায়োহাইব্রিড রোবটরা তুলনামূলকভাবে হালকাও।

image-20160809-18023-1myrrq.jpg

টাইটানিয়াম মোল্ডে টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারড বায়োবট, কারাঘেন হাডসন এবং সুং-জিন পার্ক্,  CC BY-ND

 

বায়োবট তৈরি 

গবেষকগণ লিভিং সেল বা জীবন্ত কোষের উৎপাদনের মাধ্যমে বায়োবট তৈরি করেন। সাধারণত এই কোষ নেয়া হয় ইঁদুর বা মুরগির হার্ট বা স্কেলেটাল মাসল থেকে। যদি সাবস্ট্রেট পলিমার হয় তাহলে যে ডিভাইসটি পাওয়া গেল তা হবে বায়োহাইব্রিড রোবট। এটা প্রাকৃতিক এবং মানুষ কর্তৃক নির্মিত বস্তুর হাইব্রিড।

যদি আপনি কেবল কোষগুলোকে একটি মোল্ডেড স্কেলেটনে কোন রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াই রেখে দেন, তাহলে তারা র‍্যান্ডম ওরিয়েন্টেশনে বৃদ্ধি পাবে। এর অর্থ হল, যখন গবেষকগণ তাদের চালিত করার জন্য বিদ্যুতের প্রয়োগ করবেন, তখন কোষগুলোর কনট্রাকশন ফোর্সগুলো সব দিকে প্রযুক্ত হবে, যার ফলে এই হাইব্রিড ডিভাইসটি অকার্যকরী হয়েই থাকবে।

তাই কোষগুলোর ক্ষমতাকে কাজে লাগাবার জন্য গবেষকগণ মাইক্রোপ্যাটারনিং শুরু করেন। এক্ষেত্রে কোষগুলো যে সব পদার্থের সাথে এটাচ করতে বা সংযুক্ত থাকতে পছন্দ করে সেই সব পদার্থের মাইক্রোসেল লাইন স্কেলেটনের উপর প্রিন্ট বা স্ট্যাম্প করে দেয়া হয়। এই মাইক্রোসেল লাইন কোষগুলোকে গাইড করে যে কিভাবে, কোন পথে বৃদ্ধি পেতে হবে। এরফলে কোষগুলো প্রিন্ট করা প্যাটার্নের দিকে বৃদ্ধি পায়। সব কোষের লাইন আপ করা হয়ে গেলে তারপর গবেষকগণ তাদের উপর প্রয়োজনীয় কনট্রাকশন ফোর্স প্রদান করে তাদেরকে প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারেন। আর এভাবে ডিভাইসটিকে কেবল কিছু ফায়ারিং সেল এর সমন্বয় হিসেবে বানিয়ে না রেখে গবেষকগণ কোষগুলোকে একতিত করে ডিভাইসটির পা বা ফিন হিসেবে কাজ করাতে সক্ষম হন।

image-20160809-5131-12xdbn0.jpg

টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারড সফট রোবটিক রে যেগুলোকে আলো দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। কারাঘেন হাডসন এবং মাইকেল রোজনাক , CC BY-ND

 

বায়োহাইব্রিড রোবট তৈরিতে প্রাণিদের থেকে উৎসাহ নেয়া হয়েছে 

বায়োহাইব্রিড রোবটদের বিস্তৃত ক্ষেত্রের ঊর্ধেও গবেষকগণ নেচারাল মেটারিয়াল দিয়ে কিছু সম্পূর্ণ অরগানিক রোবট তৈরি করেছেন। এই অরগানিক রোবটদের মধ্যে ডিভাইসটির বডির ক্ষেত্রে পলিমারের বদলে স্কিনের কোলাজেন ব্যবহার করা হয়েছে। ইলেক্ট্রিক ফিল্ড এর মাধ্যমে স্টিমুলেট করা হলে এরা ক্রল বা হামাগুড়ি দিতে পারে আবার কেউ বা সাঁতরাতেও পারে। আবার কোন কোন রোবট মেডিকেল টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনিক থেকে উৎসাহ নিয়েছে এবং নিজেদেরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তারা দীর্ঘ রেক্টেংগুলার বা চারকোণা হাত (বা ক্যান্টিলিভার) ব্যবহার করেন।

অন্যেরা প্রকৃতি থেকেই তাদের উৎসাহ নিয়েছেন এবং জীববিজ্ঞান থেকে ইনস্পিরেশন নিয়ে বায়োহাইব্রিড তৈরি করছেন। যেমন ক্যালিফর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষকদের দ্বারা পরিচালিত একটি দল জেলিফিশের ইনস্পিরেশনে একটি বায়োহাইব্রিড রোবট তৈরি করেছে। তারা এই ডিভাইসটির নাম দিয়েছেন মেডুসয়েড। এর বাহুগুলো একটি বৃত্তে সাজানো আছে, এবং প্রতিটি বাহু প্রোটিন লাইন দিয়ে মাইক্রোপ্যাটার্ন করা যাতে কোষগুলো জীবন্ত জেলিফিশের মাসল বা পেশির মত প্যাটার্নে বৃদ্ধি পায়। যখন কোষগুলো সংকুচিত হয়, বাহু বা আর্মগুলো ভিতরের দিকে বেঁকে যায় এবং এর মাধ্যমে বায়োহাইব্রিড রোবটটি পুষ্টিপূর্ণ তরলে সামনের দিকে এগিয়ে যায়।

আরও সাম্প্রতিক সময়ে, গবেষকগণ দেখিয়েছেন কিভাবে এই বায়োহাইব্রিড সৃষ্টিগুলোকে পরিচালিত করা যায়। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি দল জীববিজ্ঞান থেকে ইনস্পিরেশন নিয়ে বানানো মান্টা রে-শেপড রোবটকে সাঁতার শেখানোর জন্য হার্ট সেল বা হৃদকোষকে জেনেটিকালি মোডিফাই করেছে। হার্ট সেলদেরকে পরিবর্তিত করা হয়েছে যাতে এগুলো একটি নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সির আলোর প্রতিক্রিয়ায় নিজেদের সংকুচিত করতে পারে। এদের রে এর একটি দিকে যে কোষগুলো আছে দেগুলো একটি ফ্রিকোয়েন্সি বা কম্পাঙ্কতে প্রতিক্রিয়া দেখায়, অন্যদিকে অন্য দিকের কোষগুলো প্রতিক্রিয়া দেখায় অন্য কম্পাঙ্কের আলোর ক্ষেত্রে।

যখন গবেষকগণ রোবটের সামনে আলো জ্বালালেন, কোষগুলো সংকুচিত হয়ে যায় এবং মান্টা রে এর শরীরের আরও কোষে ইলেক্ট্রিক সিগনাল পাঠিয়ে দেয়। এতে রোবটটির শরীরে কনট্রাকশন বা সংকোচন ছড়িয়ে পড়ে, আর ডিভাইসটি সামনের দিকে আগায়। গবেষকগণ আলোর কম্পাঙ্কের পরিবর্তন ঘটিয়ে গবেষকগণ রোবটটিকে ডানে বা বামেও ঘুরিয়ে দিতে পারেন। যদি তারা রোবটটির একটি দিকের কোষ যে কম্পাঙ্কের আলোর প্রতি সংবেদনশীল সেই আলোকে বাড়িয়ে দেন তাহলে এর প্রতিক্রিয়ায় রোবটির সেই দিকের কোষগুলো বেশি সংকুচিত হয়, এবং এর মাধ্যমে গবেষকগণ রোবটটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হন।

 

 

বায়োবটকে শক্তিশালী করা 

বায়োহাইব্রিট রোবটিক্সের ক্ষেত্রে যখন অনেক উত্তেজনাকর ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে, তখন দেখা গেছে রোবটগুলোকে ল্যাবের বাইরে নিয়ে আসতে আরও অনেক কাজ করতে হবে। বর্তমানে ডিভাইসগুলোর আয়ু খুব কম, ফোর্স আউটপুট কম, গরি কম এবং কাজ করার ক্ষমতাও কম। স্তন্যপায়ী বা পাখিদের কোষ দিয়ে তৈরি রোবটগুলোর বেলায় পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে একটু সমস্যা রয়েছে। যেমন তাদের বেলায় তাদের বায়োলজিকাল বডির পাশে অবশ্যই অনুকূল তাপমাত্রা থাকতে হবে এবং কোষগুলোকে সবসময়ই নিউট্রিয়েন্ট রিচ লিকুইড বা পুষ্টিসমৃদ্ধ তরল সরবরাহ করতে হয়। এর প্রতিকারের একটি সাম্ভাব্য উপায় হল ডিভাইসটিকে প্যাকেজ করে রাখা যাতে এর মাসল বা পেশি বাইরের পরিবেশ থেকে সুরক্ষিত থাকে এবং এরা অবিরাম পুষ্টির যোগান পায়।

আর একটা উপায় হচ্ছে একচুয়েটর হিসেবে আরও বেশি শক্তিশালী কোষ ব্যবহার করা। কেস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ ইউনিভার্সিটির গবেষকগণ সম্প্রতি শক্তিশালী সামুদ্রিক স্লাগ Aplysia californica কে নিয়ে কাজ করার সাম্ভাব্যতা যাচাই করছেন। এর কারণ হল এরা ইনটারটাইডাল রেজিওনে (সমুদ্রের যে অঞ্চল হাই টাইড বা উচ্চ জোয়ার অঞ্চল ও লো টাইড বা নিম্ন জোয়ার অঞ্চলের মাঝামাঝি অঞ্চল) থাকায়, সারাদিনে তাপমাত্রা এবং লবণাক্ততার একটি বড় পরিবর্তন সহ্য করে। যখন জোয়ার শেষ হয়ে যায়, সি স্লাগগুলো টাইড পুলে আটকে যায়। সূর্যের তেজ বেড়ে গেলে পানি বাষ্পীভূত হয় এবং তাপমাত্রা বেড়ে যায়। আবার যখন বৃষ্টি হয় তখন আশপাশের পানির লবণাক্ততা কমে যায়। যখন আবার জোয়ার চলে আসে, সি স্লাগগুলো টাইডাল পুল থেকে আবার মুক্ত হয়ে যায়। বিবর্তনের মাধ্যমে এই সি স্লাগগুলো এরকম পরিবর্তিত পরিবেশে টিকে থাকার জন্য খুব শক্তিশালী কোষ পেয়েছে।

 

image-20160809-18037-1eyplpd.jpg

সি টার্টল থেকে অনুপ্রাণিত বায়োহাইব্রিড রোবট, এগুলোকে সি স্লাগের মাসল এর সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে, ডঃ এন্ড্রু হরচলার CC BY-ND

গবেষকগণ সি স্লাগ Aplysia এর টিস্যুকে বায়োহাইব্রিড রোবটকে একচুয়েট করার জন্য ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছেন। এটা সাজেস্ট করছে যে এই সহনশীল টিস্যু ব্যবহার করে আরও বেশি সহনশীল বায়োবট উৎপাদন করা সম্ভব। এই ডিভাইসগুলো কম ভরের বস্তুও বহন করতে পারে।

বায়োবট ডেভেলপ করার জন্য আরও চ্যালেঞ্জগুলো হচ্ছে, বর্তমানে এই ডিভাইসগুলোতে কোন ধরণের অন-বোর্ড কনট্রল সিস্টেম নেই। বরং ইঞ্জিনিয়ারগণ এদেরকে এক্সটারনাল ইলেক্ট্রিকাল ফিল্ড বা লাইটের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। সম্পূর্ণ অটোনমাস বা স্বয়ংক্রীয় বায়োহাইব্রিড ডিভাইস তৈরি করতে হলে গবেষকদের এমন ধরণের কনট্রোলারের প্রয়োজন হবে যা সরাসরি এদের পেশি বা মাসলের সাথে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া করতে পারে এবং এর মাধ্যমে এই কনট্রোলারটি এই রোবটটিকে সেন্সোরি ইনপুট দিতে পারে। এটা করার একটি উপায় হচ্ছে অরগানিক কনট্রোলার হিসেবে নিউরন বা গ্যাংলিয়ার মত নিউরন এর ক্লাস্টার ব্যবহার করা।

ল্যাবে সি স্লাগ Aplysia কে ব্যবহার করার আরেকটি কারণ আছে। এই সি স্লাগ কয়েক দশক ধরে নিউরোবায়োলজি রিসার্চের একটি মডেল। এদের মাসল এবং নিউরাল সিস্টেমের মধ্যকার সম্পর্কের ব্যাপারে ইতিমধ্যেই অনেক কিছু জানা হয়ে গেছে। যার ফলে এরও সম্ভাবনা আছে যে এদের নিউরনকে অরগানিক কনট্রোলার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে যা রোবটটিকে বলবে ঠিক কোন উপায়ে চলাচল করতে হবে এবং বিভিন্ন কাজ যেমন টক্সিন খোঁজা বা আলোকে অনুসরণ করার মত কাজ করতে হবে।

গবেষণার ক্ষেত্রটি এখনও এদের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু গবেষকগণ এখনই বায়োহাইব্রিড রোবটদের বিভিন্ন প্রয়োগের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছেন। যেমন এই সি স্লাগদের সাহায্যে তৈরি বায়োহাইব্রিড রোবটগুলোকে ওয়াটার সাপ্লাই বা সমুদ্রে ছেড়ে দেয়া যেতে পারে যেগুলো টক্সিক পদার্থকে খুঁজে বের করে আলাদা করতে পারবে বা ছিদ্রযুক্ত পাইপকে সনাক্ত করতে পারবে। এই ডিভাইসগুলোর বায়োকম্প্যাটিবিলিটির কারণে তারা যদি সমুদ্রে কোন আঘাতের কারণে ভেঙ্গে যায় অথবা কোন সামুদ্রিক প্রাণী তাদেরকে খেয়ে ফেলে তাহলে এগুলো ওয়াইল্ড লাইফ ও পরিবেশের তেমন কোন ক্ষতি করবে না, অন্তত ট্রেডিশনাল নাটস-এন্ড-বোল্টস রোবটেরা যেমনটা করত তেমনটা তো নয়ই।

একদিন মানুষের কোষ দিয়ে ডিভাইস তৈরি করা সম্ভব হবে এবং এগুলোকে চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করা হবে। বায়োবট টারগেটেড ড্রাগ ডেলিভারি (শরীরের নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয় জায়গায় সঠিক মেডিসিনটি সরবারাহ করা) করতে,  রক্তজমাট পরিষ্কার করতে অথবা কমপ্লায়েন্ট একচুয়েবল স্টেন্ট (স্টেন্ট হল ছোট মেশ টিউব বা নালিকা যেগুলো দুর্বল রক্তবাহিকার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়) হিসেবে কাজ করতে পারবে। পলিমারের বদলে অরগানিক সাবস্ট্রেট ব্যবহারের মাধ্যমে এরকম স্টেন্টকে সহজেই উইক ব্লাড ভেসেল বা দুর্বল রক্তবাহিকাকে শক্তিশালী করতে ব্যবহার করা যাবে যাতে এনিউরিজম (আর্টারি বা ধমনির দেয়ালের কোন স্থানে ফুলে যাওয়াকে এনিউরিজম বলা হয়) প্রতিহত করা সম্ভব হয়। সাম্প্রতিক টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিং এর গবেষণাও অনেক উন্নতি করছে, যেমন এখন টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে ভাস্কুলার সিস্টেম বা পরিবহন তন্ত্রের তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন খুব ছোট স্কেলের বায়োহাইব্রিড রোবট তৈরি করা হলেও এই টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিং এর গবেষণার উন্নতির ফলে একদিন বড় স্কেলের বায়ো হাইব্রিড রোবট তৈরি করা সম্ভব হবে যা এদের মাসলের সাহায্যে চালিত হবে।

 

তথ্যসূত্র:

  1. http://dx.doi.org/10.1088/1748-3190/11/3/036012
  2. http://dx.doi.org/10.1021/ac0507800
  3. http://dx.doi.org/10.1038/nbt.2269
  4. http://dx.doi.org/10.1126/science.aaf4292
  5. https://www.routledge.com/Model-Systems-and-the-Neurobiology-of-Associative-Learning-A-Festschrift/Steinmetz-Gluck-Solomon/p/book/9780415650229
  6. https://theconversation.com/biohybrid-robots-built-from-living-tissue-start-to-take-shape-62759

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.