গবেষকগণ কি ডার্ক ম্যাটারকে ব্যাখ্যা করার জন্য নতুন পার্টিকেল আবিষ্কার করতে পেরেছেন?

ডার্ক ম্যাটারের ইনডিরেক্ট এভিডেন্স। ছবিতে নীল বর্ণের আভা দ্বারা বুলেট গ্যালাক্সি ক্লাস্টার কলিশনে অদৃশ্য বস্তুর বণ্টন বোঝানো হচ্ছে

ডার্ক ম্যাটারের সত্যিকারের প্রকৃতি হল এই ডার্ক ম্যাটার অনেক পদার্থবিজ্ঞানীকে রাতে জাগিয়ে রাখে, এবং সারা পৃথিবীর গবেষকগণ এই ডার্ক ম্যাটারকে বর্তমান কোন মডেলে ফেলার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

যদিও আমাদের কাছে এই ডার্ক ম্যাটারের উপস্থিতির কোন সরাসরি প্রমাণ নেই, গবেষকগণ প্রায়ই এর ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া বা ইন্টারেকশনের মেকানিজম প্রস্তাব করে থাকেন। এখন সবচেয়ে সাম্প্রতিক যে মেকানিজমটিকে প্রস্তাব করা হয়েছে তার নাম হল “মাডালা বোজন” (Madala boson)। এটা হিগস বোজনের সদৃশ কিন্তু এরা কেবল ডার্ক ম্যাটারের সাথেই ইন্টারেক্ট বা ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া করে।

এই হাইপোথিসিজটি এই বছর ৬ সেপ্টেম্বরে একটি ইন হাউজ সেমিনারে দক্ষিণ আফ্রিকার উইটস ইউনিভার্সিটির গবেষকগণ প্রদান করেন। প্রফেসর ব্রুস মেলাডোর অধীনে গবেষকদের দলটি সাজেস্ট করে যে সার্ন এর ডেটা বা উপাত্তে যে আচমকা ২৭০ গিগাইলেক্ট্রোভোল্ট পাওয়া গেছে তা আসলে একটি নতুন বোজনকে নির্দেশ করে।

মেলাডো তার একটি বক্তব্যে বলেন, “২০১২ সালের শেষে সংগৃহীত LHC এর এক্সপেরিমেন্ট এর ডেটাগুলোর বৈশিষ্ট্য এবং বিশেষত্বগুলোর উপর ভিত্তি করে উইটস এর HEP গ্রুপ ভারত ও সুইডেনের বিজ্ঞানীদের সাথে মিলে এই মাডালা হাইপোথিসিজ দাঁড় করিয়েছে”।

যদিও এর মত হাইপোথিসিজগুলো অনেক ইন্টারেস্টিং, তবুও একে আবিষ্কার বলা দূরে থাক, এখনই একে ভবিষ্যদ্বাণীও বলা যাবে না। সার্ন নিজেই একটি টুইটে নতুন বোজন পাবার কথাকে অস্বীকার করেছে। সেখানে সার্ন থেকে বলা হয়েছে, “দুঃখিত, এখনও পর্যন্ত মাডালা বোজনের ব্যাপারের অস্তিত্ব সম্পর্কে কোন এভিডেন্স পাওয়া যায় নি”।

এই অতিরিক্ত ২৭০ গিগাইলেক্টোভোল্ট দেখা গিয়েছিল ৩ সিগমার নিশ্চয়তায় (৯৯.৮৭ শতাংশ)। যদিও এই প্রোবাবিলিটি একটা নতুন বোজনের অস্তিত্ব নির্দেশ করবে এমন কোন কথা নেই। তুলনা করলে বলা যায়, গত ডিসেম্বরে ৭৫০ গিগাইলেক্ট্রোভোল্টের বাম্প পাওয়া গিয়েছিল। এটা ছিল ৩.৯ সিগমার। কিন্তু যখন আরও ডেটা নেয়া হয়েছিল তখন এটা আর দেখা যায় নি। তাই যখন আমরা কোন নতুন পার্টিকেলের অস্তিত্বের ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হতে চাই ৯৯.৮৭ শতাংশ সম্ভাবনাও খুব একটা শক্তিশালী হয় না। যেমনটা আপনি যদি একটা বিমানে চড়েন যেটা প্রতি ৫০০ বারে একবার বিমান দুর্ঘটনায় পতিত হয়, আপনি সেই বিমানে উঠতে চাইবেন না তা দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা যতই কম থাকুক না কেন।

যখন নতুন কোন পার্টিকেলের প্রশ্ন আসে তখন পদার্থবিজ্ঞানীদের খুবই স্ট্রিক্ট বা কড়া এবং খুঁতখুঁতে হতে হয়। পার্টিকেলকে সনাক্ত করার জন্য  ৫ সিগমা বা ৯৯.৯৯৯৯ শতাংশ সম্ভাবনার প্রয়োজন হয় যা নতুন কিছু আবিষ্কারের লিমিট। তাই ২৭০ গিগাইলেক্ট্রোভোল্টের বাম্প সত্যি কোন বাস্তব পার্টিকেল কিনা এটা সম্পর্কে নিশ্চিত হবার জন্য আমাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে।

 

তথ্যসূত্র:

  1. http://www.wits.ac.za/display/events/?view=fulltext&day=06&month=9&year=2016&id=d.en.875629&timestamp=1473160800&
  2. http://www.wits.ac.za/news/latest-news/research-news/2016/2016-09/wits-scientists-predict-the-existence-of-a-new-boson-.html
  3. https://twitter.com/CERNpress/status/773509832485769216

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.