পাওয়া গেল মানুষের সাইকোপ্যাথিক পারসোনালিটির সাম্ভাব্য ব্যাখ্যা

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের গবেষকরা ব্রেইনের একটা অংশকে সনাক্ত করেছেন যেটা প্রো-সোশ্যাল বা ভাল সামাজিক আচরণ শিক্ষা দেয় এবং তারা বিশ্বাস করে এই অংশটির দুর্বলতা মানুষকে মানসিকবিকারগ্রস্থ করে তোলে এবং অসামাজিক কাজে অংশগ্রহণে সাহায্য করে।

প্রোসোশ্যাল বিহেবিয়ার অর্থাৎ ইতিবাচক সামাজিক আচরণ যেটা বলতে বুঝায় অন্যকে সাহায্য করার প্রবণতা। জটিল সমাজে সফল হতে হলে এটার গুরুত্ব অনেক বেশী। যেমন মানবজাতি বিকশিত হয়েছে নির্দিষ্ট স্নায়বিক পদ্ধিতে যা আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে শেখায়, এবং সেই সিদ্ধান্তগ্রহণ শুধুমাত্র নিজেদের জন্য নয়। স্বার্থহীনতার মাত্রার প্রবণতা অঞ্চলভেদে বিভিন্ন, কেউ কেউ অন্যের প্রতি বেশ উচ্চ সহানুভূতি আবার কেউ কেউ এ ব্যাপারে নির্মম।

ইতিবাচক আচরণের মূল চালক হচ্ছে এমপ্যাথি ( সহানূভূতি), আর সহানুভূতির অভাবে ব্যক্তিত্বে অবসাদ বাসা বাধে যেমন মনোবিকার। নিউরাল মেকানিজম (স্নায়বিক পদ্ধতি) এমপ্যাথি এবং ইতিবাচক আচরণের সাথে সংযুক্তির পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা একটা পরীক্ষা পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন যেখানে অংশগ্রহণকারীদের কতগুলো বিষয় শিখতে হয়। ঐ শিক্ষণ গুলো হলো কতগুলো প্রতীক আর সেগুলোর জন্য তাদের নগদ পুরুষ্কার দেওয়া হয়েছে তাদের জন্য। মূল উদ্দেশ্য ছিল এই পুরষ্কারগুলো অন্যদের দেওয়া। এদিকে বিজ্ঞানীর দলটি ফাংশনাল ম্যাগনেটিক রিজোনেন্স ইমেজ(fMRI) ব্যবহার করে অংশগ্রহণকারীদের ব্রেইনের কর্মকান্ড লক্ষ্য করছিল।

লিখিত ফলাফলের বর্নণা করে সহযোগী গবেষক Patricia Lockwood ব্যাখ্যা করেন “ব্রেইনের একটি বিশেষ অংশের নাম হল, সাবজেনুয়াল এন্টেরিয়র সিংগুলেট কর্টেক্স। এটি ব্রেইনের একমাত্র অংশ যেটা অন্যকে সাহায্য করার শিক্ষা দেওয়ায় উপযোগী। অর্থাৎ এটি হচ্ছে বিশেষ একটা টিউন যা অন্যের উপকার করার জন্য মানুষকে প্রভাবিত করে।

প্রসিডিং অফ দ্যা ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। এখানে দেখা যায়, যখন অংশগ্রহণকারীরা নিজের স্বার্থের জন্য কিছু নতুন আচরণ শিখছিল তখন ব্রেইনের এই অংশটি সক্রিয় ছিল না। আর তখনই অংশটি সংবেদনশীল হচ্ছে যখন সহজাত ইতিবাচক আচরণ গুলো শিখছিল। যাহোক, লকউড জোর দিচ্ছেন যে ব্রেইনের এই অঞ্চলটা প্রত্যেকের সমানভাবে সক্রিয় ছিল না।

প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীদের একটি বৈজ্ঞানিকভাবে ভ্যালিডেটেড প্রশ্নপত্র ব্যবহার করতে দিয়ে সহানুভূতি মাত্রা পরিমাপ করে গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন যে সহানুভূতি ইতিবাচক আচরণ সমাধান শেখার গতির সাথে সম্পর্কিত, এবং সম্পর্কিত তাদের Subgenual Anterior Cingulate Cortex কার্যক্রমের শক্তির সাথে।

গবেষকেরা দাবি করেন অস্বাভাবিকভাবে ব্রেইনের এই অংশনের কার্যক্রম কমে যায় যখন লোকে সহানুভূতিশীলতার অভাব বোধ করে অথবা তখন যখন তারা মনোবিকারগ্রস্থ অবস্থায় তাদের চরিত্র অসামাজিক কাজের দিকে ঝুকে থাকে।

 

তথ্যসূত্র:

  1. http://www.pnas.org/content/early/2016/08/10/1603198113.abstract
  2. http://www.ox.ac.uk/news/2016-08-16-finding-brains-generosity-centre

 

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.