ল্যাবে তৈরি কর্নিয়া অন্ধত্বের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্যে করবে

গবেষকগণ সাফল্যের সাথে কর্নিয়া কোষকে পেট্রি ডিশে রিজেনারেট করতে বা পুনরায় তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। এবং তারা মনে করছেন তাদের এই টেকনিকটি ইমপেয়ারড ভিশনে ভোগা রোগীদের ক্ষেত্রে করনিয়াল ট্রান্সপ্ল্যান্ট এর চেয়ে বেশি নিরাপদ এবং কার্যকরী উপায় হিসেবে ব্যবহার হবে। এই কোষগুলোকে এপর্যন্ত কেবল ভেড়াদের চোখে প্রবেশ করানো হয়েছে, যদিও গবেষকগণ মনে করছেন মানুষের বেলায়ও খুব শীঘ্রই এটা ব্যবহার করা যাবে।

কর্নিয়াল এন্ডোথেলিয়াল সেল (CECs) কর্নিয়ার ট্রান্সপারেন্সি বা স্বচ্ছতা বজায় রাখা, অতিরিক্ত তরল নিঃসরণ করা এবং একে ফুলে যাবার হাত থেকে রক্ষা করার কাজ করে। যাইহোক, যেহেতু এই কোষগুলো বয়সের সাথে সাথে ক্ষয়ে যেতে থাকে, দৃষ্টিশক্তিও তাই কমতে থাকে। আর চূড়ান্ত পর্যায়ে এটা অন্ধত্ব তৈরি করে।

বর্তমানে, এই সমস্যার হাত থেকে সুস্থ হবার একমাত্র উপায় হল অন্য একজনের থেকে CECs এর ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা। যদিও এই ট্রান্সপ্ল্যান্টের ক্ষেত্রে একটা ঝুঁকি থেকেই যায় যে, রিসিপেন্ট বা গ্রাহক ফরেইন টিস্যু অর্থাৎ অন্য একজনের CECs কে গ্রহণ করবে না। আর তাই সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে রোগীর নিজের CECs কেই রিজেনারেট বা পুনরুৎপাদন করা।

গবেষকগণ তাদের এই কাজটি এডভান্সড হেলথকেয়ার মেটারিয়াল  জার্নালে প্রকাশ করেছেন। এই পেপারে লেখকগণ লিখেছেন কিভাবে তারা আলট্রা-থিন পলিইথিলিন হাইড্রোফিল্ম ডেভেলপ করেন যার উপরে তার ভেড়ার CECs এর সংখ্যাবৃদ্ধি করতে পেরেছেন। এক সপ্তাহের মধ্যে এগুলো একটি কনটিনিউয়াস নেয়ার বা স্তর তৈরি করে এবং ভেড়াটির CECs এর ফিজিকাল প্রোপার্টিগুলো দেখায়।

এরপর এই ফিল্মগুলোকে ভেড়ার কর্নিয়াতে ইমপ্ল্যান্ট করা হয় যেখানে থেকে আসল CECs এসেছে এবং তার ফলে তাদের অপটিকাল ট্রান্সপারেন্সি ৯৮ শতাংশের বেশি রক্ষিত হয়েছে। গ্লুকোজের প্রতি এই ফিল্মগুলোর পারমিয়েবিলিটি প্রায় আগের নেটিভ কর্নিয়ার মতই যা নির্দেশ করছে যে তারা প্রাকৃতিক ব্যাপন বা ন্যাচারাল ডিফিউশনের চাহিদা পূরণ করতে পারবে।

তার উপর, পরীক্ষায় দেখা যায় ভেড়াদের চোখে ফিল্মগুলোর ইমপ্ল্যান্টেশনের ২৮ দিন পরে কোন ধরণের ইনফ্লেমেশন বা টক্সিসিটি নেই। এটা নির্দেশ করছে যে এই ফিল্মগুলোকে শরীর সম্পূর্ণভাবে সহ্য করতে সক্ষম।

গবেষণাটির কো অথর বারকে ওজেলিক জানান, “আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে রোগীদের নিজেদের কোষকে নিয়ে সেগুলোকে আমাদের তৈরি হাইড্রোজেল ফিল্মে রিজেনারেট করা এবং সেগুলোকে সরাসরি রোগীর কর্নিয়াতে ইমপ্ল্যান্ট করা। যেহেতু তারা তাদের নিজেদের কোষই ব্যবহার করছেন তাই টিস্যু রিজেকশন বা রোগ ছড়ানোর কোন সুযোগ এখানে থাকবে না”।

 

তথ্যসূত্র:

  1. http://onlinelibrary.wiley.com/wol1/doi/10.1002/adhm.201400045/full

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.