‘রঙ্গিলা রাসুল’ সমাচার, পাকিস্তান জন্মে এর সাম্ভাব্য ভূমিকা এবং পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইন

download

রঙ্গিলা রাসুল এবং এবং একজন জাতীয় বীর ‘ইলমুদ্দিন’

১৯২০ এর দশকে পাঞ্জাবের মুসলিমরা এবং হিন্দু আর্য সমাজ একটি একটি রাজনৈতিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল। মুসলিমরা একটি পুস্তিকা বা প্যামফ্লেট প্রকাশ করে যেখানে হিন্দুদের দেবী সীতাকে পতিতা হিসেবে দেখানো হয়। বলা হয়, এরই প্রতিশোধ নেবার জন্য আর্যসমাজের স্বামী দয়ান্দের এক অনুসারী কৃষ্ণ প্রসাদ প্রতাব, পণ্ডিত চামুপতি লাল ছদ্মনামে একটি পুস্তিকা লেখেন। এর নাম ছিল “রঙ্গিলা রাসুল”। লাহোরের এক প্রকাশক রাজপাল ১৯২৩ সালে পুস্তিকাটি প্রকাশ করেন। এই পুস্তিকায় নবী মুহম্মদের সাথে হজরত আয়শার বিবাহকে ফোকাস করে হয় যে, আয়শা নবী মুহম্মদের থেকে বয়সে অনেক ছোট ছিল। আর সেই সাথে প্রকাশ করা হয় বহুবিবাহের কুপ্রভাব সহ বিভিন্ন বয়সী নারীকে বিবাহের সমস্যাবলি। এই পুস্তিকাতে বেশ কিছু পরিমাণে নির্দিষ্ট হাদিসেরও উল্লেখ ছিল।

মুসলিমরা এই পুস্তিকার বিষয়াবলির উপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে এই ব্যাপারটিকে আদালতে নিয়ে যায়। আদালত রাজপালকে দোষী হিসেবে সাব্যস্ত করে। পরবর্তীতে আপিল করা হলে কোর্ট এই বিচারকে সমর্থন করে। যাইহোক, রাজপাল এরপর হাইকোর্টে যায়। হাইকোর্ট তাকে নির্দোষ প্রমাণ করে কারণ তিনি যা করেছেন তা ইন্ডিয়ান পেনাল কোড এর ১৫৩ ধারা অনুযায়ী কোন অপরাধের মধ্যে পড়ে না। হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্ত মুসলিমদেরকে গভীরভাবে ক্ষুব্ধ করে।

ইলমুদ্দিন নামে এক ১৯ বছর বয়সী এক কাঠমিস্ত্রীর ছেলে তার বন্ধুদের সাথে লাহোরের মসজিদ ওয়াজির খান এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। তারা তখন মসজিদের মোল্লার জ্বালাময়ী ভাষণ শোনে যেখানে ইসলামের নবীকে অমর্যাদাকারী ধর্মদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য লোকজনকে একত্রিত করা হচ্ছিল। বলা হয় এই ভাষণদাতা ছিলেন সৈয়দ আতাউল্লাহ শাহ বুখারি, আর ভাষণটি দেয়া হয়েছিল ১৯২৯ সালের ৬ এপ্রিলে।  ভাষণ শুনে ইলমুদ্দিন এক রুপি দিয়ে একটি ছোড়া কেনে। এরপর সে লাহোরের ঊর্দু বাজারে রাজপালের দোকানে যায় এবং রাজপালকে ছুড়িকাঘাতে হত্যা করে। সে পালিয়ে যাবার কোন চেষ্টা করেনি। এতে তাকে তৎক্ষনাৎ গ্রেফতার করা হয় এবং মিয়ানওয়ালি কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

ইলমুদ্দিন এমন একজনকে হত্যা করেন যিনি সেই লেখাটার লেখক ছিলেন না। হয়তো ইলমুদ্দিন এবং রাজপালের কেউই সেই পুস্তিকাটি পড়েনি। কিন্তু সেই মোল্লার তীব্র ভাষণ এই ১৯ বছরের কিশোরকে সেদিন জঘন্যতম অপরাধটি করতে প্রভাবিত করেছিল, তাও এমন একজনকে যাকে সে কোনদিন চোখেও দেখে নি।

বিচারে ইলমুদ্দিনের পক্ষের আইনজীবী ফারুক হুসাইন দাবী করেন, ইলমুদ্দিন দোষী নয়, তাকে প্রভাবিত করা হয়েছিল। কিন্তু আদলত ইলমুদ্দিনের বিরুদ্ধে রায় দেয় এবং তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। এরপর লাহোর হাইকোর্টে একটি আপিল করা হয় যেই আপিলের লইয়ার ছিলেন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। কিন্তু যাই হোক, মামলাটিতে পরাজয় হয়। পরবর্তীতে, ইলমুদ্দিন রাজা পঞ্চম জর্জের প্রতি একটি মার্সি পিটিশন বা ক্ষমা চেয়ে দরখাস্ত করেন যাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়।

১৯২৯ সালের ৩১শে অক্টোবর ইলমুদ্দিনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। মিয়ানওয়ালিতে ইলমুদ্দিনকে কবর দেয়া হয় যেখানে মুসলিমরা তার লাশকে লাহোরে দাফন করতে চেয়েছিল। ব্রিটিশরা ভয় পেয়েছিল যে, এটা একধরণের উত্তেজনা তৈরি করবে যা হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা তৈরি করতে পারে। কেবল আল্লামা মুহম্মদ ইকবাল এবং মিয়া আবদুল আজিজ এর নিশ্চিন্তকরণের পরই তার দেহ কবর থেকে ১৫ দিন পর তুলে আনা হয় এবং লাহোরে আবার কবর দেয়া হয়।

ইলমুদ্দিনের লাশ ১৯২৯ সালের ১৪ই নভেম্বরে পুনরায় কবর থেকে তোলা হয়। দুই দিন পর লাস লাহোরে পোঁছে। সমস্ত শহর এবং আশেপাশের অনেক অঞ্চল থেকে মুসলিমরা তার জানাজায় আসে। ইলমুদ্দিনের বাবা ডঃ আল্লামা ইকবালকে জানাজার নামাজের ইমাম হতে বলেন। কিন্তু ইকবাল সাহেব সেটা করতে চাননি। তিনি বলেন, “আমি একজন পাপী ব্যক্তি, ইসলামের এই বীরের জানাজার নামাজের ইমাম হবার যোগ্যতা আমার নেই”। দুই লক্ষ মুসলিম এই জানাজায় অংশগ্রহণ করেছিল যা মসজিদ ওয়াজির খান  এর ইয়াম, ইমাম মুহম্মদ শামসুদ্দীন নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কবি এবং সাংবাদিক মওলানা জাফর আলী সেখানে বলেন, “হায়! যদি আমি এরকম এক আশীর্বাদপুষ্ট সম্মান অর্জন করতে পারতাম!” আল্লামা ইকবাল এই লাশ বহন করে নিয়ে যান। যখন ইকবাল সাহেব এই লাশটিকে তার কবরে রাখতে যাচ্ছিলেন তখন তিনি বলেন, “এই অশিক্ষিত তরুণটি আমাদের মত শিক্ষিতদেরকে ছাড়িয়ে গেছে।”

সেদিন মুসলিম নেতাদের আচরণ আশানুযায়ী ছিল না। স্যার মুহমদ ইকবাল, যিনি পরবর্তীতে পাকিস্তানের জাতীয় কবি হন, এবং মওলানা জাফর আলী খান কেবল তার প্রশংসাই করে নি তাকে বীরের মর্যাদা দেন।

এবারে জিন্নাহর কথায় আসি। সেই সময় জিন্নাহ বোম্বেতে (বর্তমান ভারতের মুম্বাই) আইন প্রেকটিস করতেন। প্রশ্ন হল তিনি বোম্বেতে প্রেকটিস করলেও লাহোরের একটি মামলায় নিজেকে সেসময় জড়িয়েছিলেন কেন? যাই হোক, তার আগে বলে নেই, সেই সময় জিন্নাহ কেবলমাত্র একজন আইনজীবী ছিলেন না, তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং একজন জনপ্রতিনিধিও ছিলেন। জিন্নাহ সেই সময় কংগ্রেসের সাথে সমস্ত সম্পর্ক শুধু ছিন্নই করেননি, একই সাথে তিনি ১৯২৯ সালের ২৮ মার্চে তার “১৪ দফা” নিয়ে আসেন। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে যে ধর্মীয় আবেগের সাথে সম্পর্কের কারণেই মামলাটির প্রতি এত আগ্রহী ছিলেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে এটাই ইলমুদ্দিনের খ্যাতিকে ব্যবহার করে ভারতের সকল মুসলিমের মধ্যে একটি রাজনৈতিক চেতনা ও ধর্মীয়বোধ তৈরি করার একটি সুবর্ণ সুযোগ। আর তাই তিনি তার মামলাটি গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

কিন্তু আপিল বিভাগের ক্ষেত্রে হলেও জিন্নাহ কি এই মামলাটি গ্রহণ করে উচিৎ কাজ করেছিলেন? একজন রাজনৈতিক নেতার আচরণ তার অঞ্চলের সাধারণ মানুষের উপর প্রভাব ফেলে। তা মতামত একটি ন্যাশনাল সাইকি বা জাতীয় মনোভাবে পরিণত হয়ে যায়। জিন্নাহ কেসটি হাতে নিয়ে ও ইলমুদ্দিনকে সমর্থন করে সকলকে এই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, কেউ যদি ধর্ম অবমাননাকারীকে হত্যা করে তাহলে সে একজন খুনের আসামী হলেও তাকে সমর্থন করা উচিৎ, ধর্মাবমাননাকারীকে হত্যা করা হয়েছে বলে তার সাত খুন মাফ। তার মত একজন রাজনৈতিক নেতার পক্ষে এমন কাজ করাটা ছিল ন্যাক্কারজনক। জিন্নাহ অবশ্যই জানতেন যে ইলাম দিনকে এভাবে সমর্থন করাটা তার অনুসারীদের কাছে ইলমুদ্দিনকে একজন জাতীয় বীর বানিয়ে দেবে, সকল মুসলিম তাকে সমর্থন দেয়া শুরু করবে, মুসলিমদের মাঝে পরধর্মবিদ্বেষ বাড়াবে ও হিন্দু মুসলিম দাঙ্গাকে আরও উসকে দেবে।

পরে হয়েছিলও তাই। জিন্নাহর অংশগ্রহণ ইলমদ্দিনকে জাতীয় বীরে পরিণত হবার কাজে আরও বেশি সাহায্য করে। লাহোরে মোল্লারা মৃত্যুদণ্ডের প্রতিবাদে অনেক মিছিল বের করেছিল। পাঞ্জাবের মুসলিমদের মধ্যে এর মধ্য দিয়ে একটি রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক চেতনার উন্মেষ ঘটে। যার ফলে দেখা যায় ইলমুদ্দিনের জানাজায় দুই লক্ষ মুসলিমের অংশগ্রহণ। সাধারণ মুসলিমদের মনে ইলমুদ্দিনের ফাঁসি যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছিল তারই বহিঃপ্রকাশ হয়তো আমরা লাহোর সহও ভারতের অন্যান্য স্থানে ৪৭ এর হিন্দু মুসলিম দাঙ্গাগুলোতে দেখেছিলাম। যাইহোক, পাকিস্তান জন্মের পরে এই ইলমুদ্দিনের নামে বহু রাস্তা, পার্ক ও হাসপাতাল তৈরি হয়েছে।

যাই হোক, জিন্নাহর সেই আচরণটি পরবর্তীতে পাকিস্তানে কী প্রভাব ফেলেছে তা একটু পরে দেখবেন। এমনও হতে পারে, ইলমুদ্দিনের পক্ষে কাজ করার জন্যই জিন্নাহ পরবর্তীতে ভারতের সমস্ত মুসলিমের অবিসংবাদী নেতায় পরিণত হন। এরকম বলার কারণও একটু পরে বলছি।

 

আল্লামা ইকবাল ও পাকিস্তানের স্বাধীনতায় “রঙ্গিলা রাসুল” এর সাম্ভাব্য ভূমিকা

কাকতালীয় বা কোইনসিডেন্স কিনা জানিনা, ইলমুদ্দিনের ফাঁসির কয়েকমাস পরেই আমরা আল্লামা ইকবালের পাকিস্তান সৃষ্টির যুগান্তকারী ধারণাগুলোর অভ্যুত্থান দেখতে পাই, আর সেই সাথে দেখতে পাই তদকালীন মুসলিম লীগ নেতাদের প্রতি তার ক্ষোভ। একই সাথে দেখা যায় সেক্যুলারিজম ও জাতিয়তাবাদের প্রতি তার বিদ্বেষ।

ইকবাল ১৯৩০ সালে লাহোরে ছয়টি ইংরেজি লেকচার প্রদান করেছিলেন। আর এরপর ১৯৩৪ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেসে এই লেকচারগুলো নিয়ে “The Reconstruction of Religious Thought in Islam” বা “ইসলামের ধর্মচিন্তার পুনঃপ্রতিষ্ঠান” নামক বইটি প্রকাশ করেন। এই বইগুলো মাদ্রাজ, হায়দ্রাবাদ ও আলিগড়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এই লেকচারগুলোতে বর্তমান যুগে ইসলামের ধর্ম ও রাষ্ট্রদর্শন-আইনদর্শন (পলিটিকাল এন্ড লিগাল ফিলোসফি) হিসেবে দ্বৈত ভূমিকার কথা বলা হয়। অর্থাৎ তার সেই লেকচারগুলো অনুসারে, ইসলাম শুধুমাত্র একটি নিছক ধর্ম নয় এটা একটি রাজনৈতিক ও আইনগত নির্দেশনা। কাউকে ইসলাম পালন করতে হলে তাকে ইসলামের এই রাজনৈতিক ও আইনগত দর্শনকে অন্তর থেকে মেনে চলতে হবে। এই লেকচারগুলোতে ইকবাল সেসময়ের মুসলিম রাজনীতিবিদদের আচরণ ও প্রবণতার তীব্রভাবে সমালোচনা করেন। তিনি বলেন সকম মুসলিম রাজনীতিবিদগণ নীতিহীন ও বিপথগামী হয়ে পড়েছে। তারা কেবল ক্ষমতা নিয়েই সুখে থাকতে চায়, আম মুসলিম জনতার পাশে তারা একেবারেই দাঁড়াতে চান না।

ইকবাল তার ভীতি সম্পর্কে বলেন, কেবলমাত্র সেক্যুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতাই ইসলাম ও মুসলিম সমাজের  আধ্যাতিক ভিত্তিকে ধ্বংস করে দেবে না, বরং ভারতের হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যাও মুসলিমদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক অবস্থানকে প্রভাবিত করবে। তিনি তার মিশর, আফগানিস্তান, ইরান ও তুরস্ক ভ্রমণেও বৃহৎ ইসলামিক রাজনৈতিক সহযোগীতা ও একতাকে প্রমোট করেছিলেন। তিনি এই সকল মুসলিম রাষ্ট্রের মধ্যকার জাতীয়তার পার্থক্যকে ঘুচিয়ে দেবার দাবী তুলেছিলেন। বিভিন্ন আয়োজনে তিনি মুসলিম রাজনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করার কথা বলেছিলেন। ডঃ বি আর আম্বেদকারের সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তিনি ভারতের অঙ্গরাজ্যগুলোকে সরাসরি ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণে স্বয়ংসম্পূর্ণ একক হিসেবে দেখতে চান কিন্তু কোন কেন্দ্রীয় ভারতীয় সরকার তিনি চান না। তিনি ভারতে একটি সায়ত্বশাসিত মুসলিম অঙ্গরাজ্যের স্বপ্ন দেখেন। তিনি ভয় পেতেন যে, একটি একক ইন্ডিয়ান ইউনিয়নে মুসলিমরা থাকলে তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে বৈষম্যের শিকার হতে হবে। ১৯৩০ সালে এলাহাবাদ অধিবেশনে আল্লামা ইকবাল মুসলিম লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং তিনি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলো নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের অধিনে একটি স্বাধীন অঙ্গরাজ্য গঠনের লক্ষ্য স্থির করেন। তিনি বলেন,

“আমি পাঞ্জাব, উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, সিন্ধু ও বেলুচিস্তান নিয়ে একটি একক রাজ্য দেখতে চাই, যা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনে অথবা ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ছাড়াই একটি সায়ত্তশাসিত সরকার গঠন করবে। একটি একক উত্তর পশ্চিম ভারতীয় মুসলিম রাজ্যই আমার চোখে ভারতের মুসলিমদের অন্তিম ভাগ্য, অন্তত উত্তর পশ্চিম ভারতের মুসলিমদের জন্য তো বটেই।”

তার এই বক্তৃতায়, ইকবাল জোড় দিয়ে বলেন, ইসলাম ধর্ম খ্রিষ্ট ধর্মের মত নয়। ইসলাম তার আইনি ধারণা, রাজনৈতিক গুরুত্ব এবং তার ধর্মীয় আদর্শকে সাথে নিয়ে এসেছে যাকে একটি অলঙ্ঘনীয় সামাজিক নীতি বলেই বিবেচনা করতে হবে। তাই,

“জাতীয়তার ভিত্তিতে কোন নীতি প্রস্তুত করার অর্থ হল ইসলামি সার্বভৌমত্বের নীতি থেকে দূরে সরে আসা। মুসলিমদের ক্ষেত্রে এটা চিন্তা করা যায় না”।

এভাবে ইকবাল কেবলমাত্র মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি রাজনৈতিক একতাই চাননি, তিনি ইসলামী নীতিভিন্ন অন্য কোন নীতির অধীনে কোন বিস্তৃত সম্প্রদায়ের মাঝে মুসলিমদের অস্তিত্বকেও মেনে নিতে পারেননি। একইভাবে তিনি কোন জাতিসত্তার ভিত্তিতে আলাদা আলাদা রাজ্য বা রাষ্ট্র গড়ে উঠুক তাও কখনও চাননি, তার কাছে ধর্মই রাষ্ট্র বা রাজ্য তৈরির মূল ভিত্তি ছিল। যাই হোক, এভাবেই আল্লামা ইকবাল সাহেব প্রথম একটি তত্ত্ব প্রদান করেছিলেন, পরবর্তীকালে যা “দ্বিজাতিতত্ত্ব” নামে পরিচিতি পায়। এই নীতি অনুসারে মুসলিমরা একটি আলাদা জাতি এবং তাই তারা সবসময় ভারতের অন্যান্য অঞ্চল ও অন্যান্য সম্প্রদায় থেকে রাজনৈতিক স্বাধীনতা আশা করে। তিনি পরিষ্কারভাবে তার স্বপ্নের রাষ্ট্রে বা রাজ্যে ধর্মনিরপেক্ষতা এবং জাতীয়তাবাদকে প্রত্যাখ্যান করেন।

তো পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে যে, আল্লামা ইকবালের রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ মতাদর্শগুলোর সবকটির জন্মই হয় ১৯৩০ সালে ইলমুদ্দিনের মৃত্যুর কয়েক মাস পর। আমি এটা বলছি না যে রঙ্গিলা রাসুলের প্রকাশে ক্ষুব্ধ হওয়া কিংবা ইলমুদ্দিনের মৃত্যুর কারণে শোকাগ্রস্ত হয়ে তিনি এরকম একটার পর একটা তত্ত্বের জন্ম দিতে থাকেন। আমি এটাই বলতে চেয়েছি শুধু, ইলমুদ্দিন তদকালীন ভারতীয় পশ্চিমাঞ্চলের মুসলিমদের একটি বড় অংশের মানুষের মধ্যে যে একটি ক্ষোভ ও ধর্মীয় চেতনার সৃষ্টি করেছিল তা হয়তো আল্লামা ইকবালকে এধরণের সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহিত করেছিল। এখান থেকে আমরা আরেকটি বিষয় যেটা লক্ষ্য করছি তা হল অন্যান্য মুসলিম লীগ নেতার প্রতি আল্লামা ইকবালের প্রচণ্ড ক্ষোভ। ইকবাল বারবার বলছিলেন যে নেতারা ইসলাম ও সাধারণ মুসলিমদের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, তারা সঠিক ইসলাম মেনে চলছেন না। জিন্নাহ থেকে শুরু করে সকল মুসলিম লীগ নেতার উপরেই তার এই রাগ ছিল। কিন্তু এই রাগ মুসলিম লীগ নেতাদের ইলমুদ্দীনের পাশে তেমন ভাবে না দাঁড়ানোর কারণেও কিছুটা হতে পারে। সাধারণ মুসলিমের পাশে দাঁড়ানো বলতে তিনি ইলমুদ্দিনকে সমর্থন করা হাজার মানুষের পাশে দাঁড়ানোকেও বোঝাতে পারেন। যাই হোক, সকল মুসলিম লীগ নেতাদের প্রতি ক্ষোভ থাকলেও পরবর্তীতে আমরা জিন্নাহর প্রতি ইকবালের আস্থা ও সমর্থনকে দেখতে পাই।

ইকবাল দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন যে, জিন্নাহই একমাত্র নেতা যিনি ভারতের মুসলিমদের একত্রিত করতে পারেন এবং ব্রিটিশদের ও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মুসলিম লীগকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। তিনি জিন্নাহকে চিঠি লেখেন, “আমি জানি যে আপনি খুব ব্যাস্ত। কিন্তু আমি আশা করি, আমি যদি মাঝেমাঝে আপনাকে চিঠি লিখি আপনি কিছু মনে করবেন না, কারণ আপনিই এখন ভারতের একমাত্র মুসলিম যাকে উত্তর পশ্চিম ভারতের মুসলিম সম্প্রদায় এবং সম্ভবত সমগ্র ভারতের মুসলিম সম্প্রদায় তাদের পথপ্রদর্শক হিসেবে আস্থা রাখতে পারে।”।

ঐতিহাসিকগণ বলেন, জিন্নাহ কংগ্রেস এর সাথে সমস্ত সম্পর্ক ত্যাগ করলেও কংগ্রেসের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন এবং ভারত বিভাগ তিনি চাননি। কিন্তু ১৯৩০ সালে একটি আলাদা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যের ধারণা তৈরির পর থেকেই ইকবাল বারবার জিন্নাহকে পাকিস্তান নামে একটি আলাদা রাষ্ট্র তৈরির কথা বলতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত জিন্নাহ ১৯৪০ সালে অফিশিয়ালি ঘোষণা দেন যে পাকিস্তান সৃষ্টিই তার লক্ষ্য। ইকবাল জিন্নাহকে সবসময়ই একটি আলাদা মুসলিম রাষ্ট্রের গঠনের জন্য কথা বলে আসছিলেন। ১৯৩৭ সালের ২১শে জুন জিন্নাহকে লেখা ইকবালের একটি চিঠি দেখুন,

“একটি আলাদা মুসলিম অঙ্গরাজ্যই কেবল ভারতকে শান্তিপূর্ণ রাখতে পারে এবং মুসলিমদেরকে অমুসলিমদের কর্তৃত্ব থেকে রক্ষা করতে পারে। কেন উত্তর পশ্চিম ভারত এবং বাংলার মুসলিমদেরকে একটি জাতি হিসেবে বিবেচনা করা হবে না, যে জাতি নিজের সিদ্ধান্তেই চলতে পারে, যেমনটা ভারতের মধ্যকার জাতিগুলো এবং বাইরের জাতিগুলো চলছে?”

পাঞ্জাব মুসলিম লীগের সভাপতি হিসেবে ইকবাল জিন্নাহ এর রাজনৈতিক কার্যকলাপ ও পাঞ্জাবী নেতা স্যার সিকান্দার হায়াত খানের রাজনৈতিক চুক্তির সমালোচনা করেন যাদেরকে ইকবাল সামন্তপ্রভু শ্রেণীর প্রতিনিধি হিসেবে দেখতেন এবং যারা ইসলাম ও তার মূল রাজনৈতিক দর্শনের প্রতি দায়িত্বশীল ছিলেন না। যাই হোক, ইকবাল প্রতিনিয়তই মুসলিম নেতাদের ও জনগণকে জিন্নাহ এবং মুসলিম লীগকে সমর্থন করতে উৎসাহিত করেছেন। ভারতের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বলার সময় তিনি বলেন,

“ কেবল একটাই রাস্তা খোলা আছে। মুসলিমদেরকে জিন্নাহ্‌র হাত শক্ত করতে হবে। তাদের সবাইকে মুসলিম লীগে অংশগ্রহণ করা উচিৎ। আমরা সকলে একত্রে মিলিত হলেই কেবল হিন্দু ও ব্রিটিশ উভয়ের বিরুদ্ধেই ভারতের প্রশ্নে লড়াই করতে পারব। এটা ছাড়া, আমাদের দাবী কখনই বাস্তবায়িত হবে না। সবাই বলবে আমাদের দাবী সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়াবে। কিন্তু সেটা তাদের আমাদের উদ্দেশ্যকে বাঞ্চাল করার কৌশল ছাড়া আর কিছুই না। এই দাবী আমাদের জাতীয় অস্তিত্বকে রক্ষা করার জন্য… মুসলিম লীগের নেতৃত্বে এই যুক্তফ্রন্ত গঠিত হতে পারে। আর কেবল জিন্নাহ্‌র নেতৃত্বেই মুসলিম লীগ বিজয়ী হতে পারে। এখন জিন্নাহ ছাড়া আর কেউই মুসলিমদের নেতৃত্বদানের ক্ষমতা রাখে না।”

 

প্রশ্ন হচ্ছে, যেখানে ১৯৩০ সালের দিকে আল্লামা ইকবাল সমস্ত মুসলিম লীগ নেতার উপরেই ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি হঠাৎ করে জিন্নাহ এর উপরে এত দরদ দেখানো শুরু করলেন কেন? এর কারণ এটা নয়তো যে জিন্নাহ ইলমুদ্দিনের কেসে বোম্বে থেকে অংশগ্রহণ করেছিলেন। আর একারণে অন্যান্য যে কোন নেতার চাইতে জিন্নাহই ইকবালের কাছে এতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে আর জিন্নাহর চোখ দিয়েই ইকবাল সাহেব পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখতে থাকেন? হতে পারে। কিন্তু এতে জিন্নাহর নিজের উপকার হয় নি কী? আল্লামা ইকবাল যখন সকলকে কেবল জিন্নাহকেই মুসলিমদের স্বাধীনতা এনে দিতে একমাত্র সক্ষম নেতা হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন তখন ভারতের সকল মুসলিমদের কাছে জিন্নাহ এক অবিসংবাদি নেতায় পরিণত হয়ে গিয়েছিলেন।

 

পাকিস্তানের বর্তমান অবস্থা, ব্লাসফেমি আইন এবং ইলমুদ্দিন ইস্যু

এতক্ষণ যা বলেছি তার সবই থিওরি মাত্র। এর কোন সত্যতা নেই। কিন্তু এখন যা বলব সেগুলো ফ্যাক্ট। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে।  একশো বছর আগে লাহোরে ধর্মানুভূতিতে আঘাত নিয়ে যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল তা আজ পাকিস্তানের লাহোর সহ অন্যান্য অঞ্চলে এখনও হয়ে চলেছে। এর আগে চলুন কিছু জিনিস জেনে নেয়া যাক।

ইলাম দিনের হত্যার অনেক সুদূরপ্রসারী প্রভাব ছিল।  এর ফলে ইন্ডিয়ান পেনাল কোডে একটি নতুন অধ্যাদেশ যুক্ত হয়, যেখানে কারও ধর্মানুচূতিতে আঘাত করলে তা অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। পরবর্তীতে পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হবার পর পাকিস্তান পেনাল কোড অনুসারে “কথায়, দৃশ্যতভাবে, অভিযোগের মাধ্যমে বা ব্যাঙ্গ করে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ উপায়ে নবী মুহম্মদকে অপমান করা” কে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। এরপর প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হকের সময়ে ১৯৮২ সালে ২৯৫বি সেকশনে কোরান অবমাননার শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১৯৮৬ সালে ২৯৫সি সেকশন অনুযায়ী নবী মুহম্মদ সম্পর্কে কটুক্তি করলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান দেয়া হয়।

এখন আসি পাকিস্তানের অবস্থা ও এই ব্লাসফেমি আইনের অপব্যাবহার প্রসঙ্গে। পাকিস্তানের কারাগারগুলোতে দেখা যায় সেখানকার কয়েদীদের একটি বড় অংশ ব্লাসফেমি আইনের দায়ে দণ্ডিত কয়েদি। এর মধ্যে বেশিরভাগই যে খ্রিস্টান, হিন্দু ও আহমদিয়া (এরা রাষ্ট্র কর্তৃক ঘোষিত অমুসলিম) হবে তা তো বোঝাই যায়, কিন্তু এরা ছাড়াও এখানে কিছু মুসলিমও আছে। জানা যায় তাদেরকে ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে ব্লাসফেমি আইনে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। কখনও সম্পত্তি নিয়ে কলহের কারণে, কখনও জমিজমা নিয়ে ঝামেলার কারণে বা কখনও ব্যক্তিগত বিরোধের জোড়ে তাদের উপরে ব্লাসফেমি আইন একধরণের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

এতো গেল আইনিভাবে ভুক্তদের কথা। আবার জিন্নাহর কথায় ফিরে আসি। ইলমুদ্দিনকে সমর্থন করে জিন্নাহ তার জাতির পুত্রদেরকে একটা জিনিস খুব ভালভাবেই শিখিয়ে গেছেন। সেটা হল, ধর্মরক্ষায় আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া হয়েছে এই অজুহাতে দোষীকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করা। জিন্নাহ এই কাজটি করে ইলমুদ্দিনকে তো বীরের আসনে বসিয়েছেনই সেই সাথে এরকম আরও যে করবে তারাও পাকিস্তানে বীর বলে বিবেচিত হবে সেই ইঙ্গিতও তিনি এরই মাধ্যমে দিয়ে গেছেন। অনেক জায়গায় ধর্ম অবমাননার কারণে বিচার বহির্ভূতভাবে মানুষকে হত্যা করা হয়। হত্যাকারীরা মনে করে, ধর্ম অবমাননাকারী কাউকে যদি হত্যা করা হয় তাহলে সেটা বৈধ বলে বিবেচিত হবে এবং সেটাকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে না। আবার এরকমও তারা মনে করে যে কাউকে হত্যা করে তার নামে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ চাপিয়ে দিলে শাস্তির আর কোন ভয় থাকবে না। মজার ব্যাপার হল তাদের এই চিন্তাটি খুব একটা অবাস্তব নয়। সত্যি সত্যি এদেরকে রক্ষা করতে আইনজীবী, মোল্লারা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতারা পর্যন্ত সবাই এগিয়ে আসে। বিশ্বাস হচ্ছে না? তাহলে একটা উদাহরণ দেই।

এটা একটি সাম্প্রতিক ঘটনা। মুহম্মদ কাদরি ছিলেন পাকিস্তানের একজন পুলিসম্যান এবং ইসলামিক ফান্ডামেন্টালিস্ট। সে এলিট ফোর্সের কমান্ডো হিসেবে প্রমোটেড হয় এবং পরবর্তীতে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের গভর্নর সালমান তাসীরের বডিগার্ড হয়। সে ২০১১ সালের ৪ জানুয়ারিতে সালমান তাসীরকে গুপ্তহত্যা করে। তার ভাষ্যমতে, সালমান তাসীর বিবি আয়শাকে দোষারপ করেছিল বলে ধর্ম অবমাননার কারণে সে তাকে হত্যা করেছে।

এরপরেই খেলা শুরু। জিন্নাহর উদাহরণ ধরে পাকিস্তানের শিক্ষিত আইনজীবীদের মঞ্চে প্রবেশ। সেদিনকার জিন্নাহর মতই মুহম্মদ কাদরীর কেসকে ডিফেন্স করেছেন লাহোর হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত চিফ জাস্টিস খাজা মোহাম্মদ শরিফ এবং অবসরপ্রাপ্ত জাস্টিস মিয়া নাজির আক্তার, যারা মুমতাজ কাদরি কেসের আপিলেট ডিফেন্স লইয়ার ছিলেন।  সস্তা খ্যাতি পাওয়ার জন্য তারা ইলমুদ্দিনের উদাহরণ ব্যবহার করে জিন্নাহরই মত খুনিকে সমর্থন করছেন। কিন্তু এটা ভুলে গেছেন যে ধর্ম অবমাননার কারণে কাউকে খুন করলেও খুন খুনই হয়। শুধু তাই নয়, তারা এটাও চিন্তা করছেন না যে তাদের মুমতাজ কাদরিকে সমর্থন দেবার ফলে কাদরি সকলের কাছে জাতীয় বীরে পরিণত হবেন এবং সালমান তাসীরকে হত্যা করা সকলের চোখে বৈধ হয়ে যাবে, আর এই উদাহরণটি পরবর্তীতে আরও বেশি অমুসলিম ও একইসাথে মুসলিম নিরপরাধী ব্যক্তিকেও ভোগাবে।  আর এটাও তো প্রমাণ করার কোন পথ নেই যে সালমান তাসীর আসলেই ধর্ম অবমাননা করেছিল কিনা।

১৯২৯ সালের অক্টোবরে ইলমুদ্দিনের ফাঁসি ঠেকাতে মোল্লারা অনেক প্রতিবাদ মিছিল বের করে। একইভাবে দেখা গেছে মুমতাজ কাদরির মুক্তির জন্যও মোল্লারা অনেক প্রতিবাদী মিছিল বের করেছে, রাইট উইং কলামিস্টরা তাকে নিয়ে বিস্তর লেখালেখি করেছে, তার সপক্ষের শিক্ষিত আইনজীবীরা যেই জাজ কাদরির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে তার অফিস ভাংচুর করেছে।

যাই হোক, ৬ অক্টোবর ২০১১ সালে তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। আর দীর্ঘ ৫ বছর পর ২০১৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারিতে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

ব্লাসফেমি আইনের কুপ্রভাব পাকিস্তানে এখন খুব ভা1লভাবেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পাকিস্তানের এই বর্তমান চিত্রটি দেখলে আমাদের চোখের সামনে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ চিত্রটাই ভেসে ওঠে। এরকম দিন এই বাংলাতেও আসবে কিনা এটা ভেবে ভয় হয়।

তথ্যসূত্র:

  1. http://www.rationalistpakistan.com/from-ghazi-to-qadri/
  2. http://www.siasat.pk/forum/showthread.php?53028-The-Story-of-Ghazi-Ilm-Din-Shaheed
  3. http://www.allamaiqbal.com/person/biography/biotxtread.html
  4. http://www.allamaiqbal.com/person/movement/move_main.htm
  5. https://en.wikipedia.org/wiki/Mumtaz_Qadri

– মার্ক এন্টনি

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.